বিদ্যাসাগর কলেজ।
মাস তিনেক আগেই বিজেপির রোড শো-কে ঘিরে তাণ্ডবে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুর হয় বিদ্যাসাগর কলেজে। তার পরে তাঁর জোড়া মূর্তি বসেছে। বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষে এ বার এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নিল ওই কলেজ। তার মধ্যে আছে বিশেষ ডাক-কভার প্রকাশ, সংগ্রহশালা নির্মাণ ইত্যাদি।
বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডু জানান, ডাক বিভাগের সহযোগিতায় বিদ্যাসাগরের একটি বিশেষ কভার প্রকাশ করা হবে। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগরের ২০০ বছরের জন্মদিন উপলক্ষে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে এক বছর নানা ধরনের অনুষ্ঠান হবে। তার মধ্যেই আছে এই বিশেষ কভার। ডাক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে এই কভার প্রকাশের দিনক্ষণ স্থির করা হবে।’’
মে মাসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রোড শো ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে উত্তর কলকাতার কলেজ স্ট্রিট ও বিধান সরণি। ওই রোড শো বিদ্যাসাগর কলেজের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিজেপি-সমর্থকেরা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালায় বলে তৃণমূলের অভিযোগ। বিজেপির অভিযোগ, ওই মিছিল যাওয়ার সময় তৃণমূলের লোকজনই কলেজের ভিতর থেকে ইটপাটকেল ছুড়ে গন্ডগোল পাকায়।
সেই ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদ্যাসাগর কলেজে গিয়ে বিদ্যাসাগরের নতুন মূর্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই অনুযায়ী নতুন মূর্তি বসেও গিয়েছে ওই কলেজে। গৌতমবাবু জানান, বিদ্যাসাগরের ২০০ বছরের জন্মদিবস উপলক্ষে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য কলেজকে এক কোটি টাকা দেবেন বলে একটি অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও সেই টাকা এখনও কলেজ-কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছয়নি। টাকা পাওয়া গেলে কোন কোন খাতে তা খরচ করা হবে, ঠিক করবে কলেজ। বিদ্যাসাগরের জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি মিউজ়িয়াম বা সংগ্রহশালা তৈরির পরিকল্পনা আছে কলেজ-কর্তৃপক্ষের। অধ্যক্ষ জানান, বিদ্যাসাগরকে নিয়ে একটি আর্কাইভ রয়েছে। সেখানে আছে ওই মনীষীর ঘড়ি, বই, চেয়ার ইত্যাদি। সেই আর্কাইভ নতুন করে সাজানোরও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। মূর্তি ভাঙার পরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বিদ্যাসাগরের একটি মূর্তি বসেছে কলেজের ভিতরে। পূর্ণমূর্তিটি বসানো হয়েছে কলেজ ভবনের বাইরে। অধ্যক্ষ জানান, বাইরের মূর্তিটির উপরে আচ্ছাদন নেই। তাই ফাইবারের মূর্তিটি অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। দ্বিশতবর্ষের অনুষ্ঠান শুরুর আগেই সেই মূর্তির উপরে আচ্ছাদন দেওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাবে।