South Dum Dum Municipality

South Dumdum: দক্ষিণ দমদমের উপপ্রধানের নাম তোলা-বিতর্কেও!

সূত্রের খবর, নিতাই ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তাঁর কিছু কার্যকলাপের কথা মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪৪
Share:

দক্ষিণ দমদম পুরসভা। ফাইল চিত্র।

বার বার এক জনকে ঘিরেই বিতর্ক।

Advertisement

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্তের বিরুদ্ধে এ বার তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল। লেক টাউনের একটি বন্ধ সিনেমা হল ভাঙার বরাত পাওয়া এক ঠিকাদার নিতাইয়ের বিরুদ্ধে ২১ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়ার অভিযোগ করেছেন। ওই ঠিকাদারের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দফতরে তিনি অভিযোগ নথিভুক্ত করেছেন। এই নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভায়।

ঘটনার পরেই যে প্রশ্নটি সব চেয়ে বেশি আলোচনায়, তা হল, বার বার অভিযোগ ওঠা এক জন ব্যক্তি সম্পর্কে দলীয় নেতৃত্ব কী ভাবছেন? যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে তাঁকে কি ছাড়পত্র দিতে চাইছেন দলীয় নেতৃত্ব, না কি তাঁকে নিয়ে ঘটে চলা অনিয়ম ও অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে চাইছেন তাঁরা?

Advertisement

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পরে ‘নিয়ম-বহির্ভূত’ ভাবে ছ’টি দফতর পেয়েছিলেন নিতাই। স্বয়ং পুরমন্ত্রী বলেছিলেন, এটা অনিয়ম। এ দিনও ফিরহাদ বলেন, ‘‘এখন
দফতর কাউকে দেখতে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু এ ভাবে কখনওই দফতর বণ্টন করা যায় না। চেয়ারম্যান পারিষদদের নিয়ে বোর্ডের বৈঠকে সকলের অনুমোদন নিয়েই দফতর বণ্টন করতে হবে।’’

এরই মধ্যে যোগ হয়েছে আনন্দ পোদ্দার নামে ওই ঠিকাদারকে তোলা চেয়ে হুমকির বিষয়টি। আনন্দ জানান, লেক টাউনের ওই সিনেমা হলের মালিকের কাছ থেকে সেটি ভাঙার বরাত পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘২১ লক্ষ টাকা তোলা দিতে না পারায় কাজটা ছেড়ে দিতে বাধ্য হলাম। গত বছরের ডিসেম্বরে হল মালিকের সঙ্গে কাজের বরাত নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হই। জানুয়ারির মাঝামাঝি কয়েক দিন কাজ হওয়ার পরেই দুষ্কৃতীরা এসে শ্রমিকদের সেখান থেকে বার করে দিয়ে নিতাইদার সঙ্গে আমাকে যোগাযোগ করতে বলে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রফা সূত্র হিসেবে নিতাই দত্ত ২১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আমি ১০ লক্ষ টাকা অবধি দিতে চেয়েছিলাম। উনি রাজি হননি। এর দিনকয়েক পরে কাজটা দখল করে নিয়ে অন্যকে দিয়ে দেওয়া হল।’’

সূত্রের খবর, নিতাই ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পরে তাঁর কিছু কার্যকলাপের কথা মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তার পরে মন্ত্রী সুজিত বসুর কাছে মুখ্যমন্ত্রী নিজেও এ নিয়ে তাঁর উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। কারণ নিতাই হলেন সুজিতের ‘বিশ্বস্ত অনুচর’।

এর আগে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় সবার অজানতে নিতাইকে ছ’টি দফতর কেন দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়ে গত বৃহস্পতিবার পুরসভার প্রথম বোর্ড মিটিংয়ে কাউন্সিলরদের বড় অংশ চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরীর কাছে প্রতিবাদপত্র জমা দেন। এ নিয়ে জারি হওয়া কস্তুরীর নির্দেশনামা প্রত্যাহারের দাবিও তোলেন ওই কাউন্সিলরেরা। কিন্তু কস্তুরী তা প্রত্যাহার না করায় এখন পরিষ্কার নয় যে, দফতরগুলি নিতাইয়ের হাতেই থাকবে, না কি নতুন সিদ্ধান্ত হবে। যদি অনিয়মই হয়ে থাকে, তা হলে সেটা বহাল রাখা হবে কেন, পুরসভার ভিতরে সেই গুঞ্জনও অব্যাহত।
তার মধ্যে সিনেমা হল ভাঙার ওই প্রসঙ্গ সামনে আসায় নিতাইকে ঘিরে বিতর্ক আরও বড় আকার নিয়েছে বলেই দাবি।

মন্ত্রী তথা দলের শীর্ষ স্তরের নেতা ফিরহাদ হাকিম ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে অবশ্য বলেন, ‘‘অভিযোগ যে কেউ করতে পারেন। কিন্তু আমাদের দলে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি আছে। কোনও অভিযোগ এলে সেখানেই পাঠানো হয়। কমিটির তদন্তে যদি অভিযোগের সপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ উঠে আসে, তখন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’’

অভিযোগ প্রসঙ্গে নিতাইকে ফোন এবং মেসেজ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। নিতাইয়ের পক্ষ নিয়ে মন্ত্রী সুজিত বসুর পাল্টা দাবি, ‘‘নিতাইয়ের বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্র হয়েছে। নিতাই কেমন ছেলে, এখানকার মানুষ জানেন। নিতাই এ বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ করেছেন। ওঁর বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করছেন, তাঁর কাছে উপযুক্ত প্রমাণ আছে তো? আমরা আইনের দ্বারস্থ হব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement