চলে গেলেন সাংবাদিক অমিত বসু। নিজস্ব চিত্র
শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রবীণ সাংবাদিক অমিত বসু। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। আজ, সোমবার, ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ উত্তর কলকাতার রামকৃষ্ণ দাস লেনে তাঁর পৈত্রিক বাড়ি তথা জন্মভিটেয় ঘুমের মধ্যেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। দু’মাস আগে ক্যানসার ধরা পড়েছিল তাঁর ফুসফুসে।
বৃদ্ধা মা, একমাত্র পুত্র ছাড়াও এক দিদি ও এক ভাই-সহ অসংখ্য স্বজন-বন্ধু এবং সাংবাদিক সহকর্মী রেখে গেলেন অমিত বসু। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস শুর এবং সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক-সহ কলকাতা এবং বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত বহু সাংবাদিক। শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি হাইকমিশনার মিয়া মহম্মদ মাইনুল কবির।
আরও পড়ুন- খালেদার ভোট প্রার্থনা, দলেও অনেকে অবাক
অমিত বসুর দিদি সুমিতা ঘোষ তাঁর মৃত্যু খবর নিশ্চিত করে জানান, ‘অনেক রাত পর্যন্ত লেখালেখি করত অমিত। রবিবার শেষ রাতের দিকে কিছু সময় ছাদে পাইচারি করে ঘুমিয়ে পড়েছিল। সকালে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে গৃহপরিচারিকা সবাইকে খবর দেন। পারিবারিক চিকিৎসক এসে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’ সোমবার বিকেলে নিমতলা শ্মশানে অমিত বসুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
অমিত বসু দীর্ঘ দিন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। ঢাকার ‘দৈনিক জনকণ্ঠ’ পত্রিকায় কলকাতা প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। একই সঙ্গে কলকাতার ‘তারা নিউজ’-এর বাংলাদেশ বিষয়ক সম্পাদকদের দায়িত্ব সামলেছেন বহু দিন। পেশার কারণে ভারত, বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের বহু দেশে ঘুরেছেন তিনি।
গত বছর দুয়েক ধরে ‘আনন্দবাজার ডট কম’-এ অমিত বসু নিয়মিত বাংলাদেশ বিষয়ক বিশ্লেষণধর্মী লেখা লিখতেন। ঢাকার দৈনিক ‘কালের কণ্ঠ’তে ‘এপার-ওপার’ শিরোনামের সাপ্তাহিক কলম দুই বাংলার পাঠক সমাজের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। কলকাতার অনলাইন পত্রিকা ‘এইমুহুর্তে ডট কম’-এর প্রধান সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন বেশ কিছু দিন।
কলম লেখার পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে নিয়মিত উপন্যাসও লিখে গেছেন অমিত বসু। মরমিয়া, বিহান, উজান তাঁর লেখা উপন্যাসের মধ্যে কয়েকটি। ঢাকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় ২০১৬ সালে ইদ সংখ্যায় ‘দোসর’ উপন্যাস প্রকাশিত হয়। এটাই তাঁর লেখা শেষ উপন্যাস। কলকাতায় এই উপন্যাসের আনুষ্ঠানিক প্রকাশের প্রস্তুতির মধ্যেই লেখকের জীবনাবসান ঘটল।