পুজো শেষের পরে পুরকর্তাদের দাবি, তাঁদের আবেদনে অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তাই সাড়া দিয়েছেন। ফাইল চিত্র।
ছবিটা কিছুটা হলেও বদলাতে শুরু করেছে। পুজোয় তার প্রমাণ মিলল। এমনই দাবি পুরসভার। দূষণ ঠেকাতে পুজোর আগেই উদ্যোক্তাদের কাছে প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর ব্যবহার বন্ধের অনুরোধ করেছিল বিধাননগর পুরসভা। পুজো শেষের পরে পুরকর্তাদের দাবি, তাঁদের আবেদনে অধিকাংশ পুজো উদ্যোক্তাই সাড়া দিয়েছেন। ফলে গত বারের তুলনায় এ বারে প্লাস্টিক কিংবা থার্মোকলের ব্যবহার কমেছে।
দূষণ রোধে পুরসভা সচেতনতার প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ করছে। তারই অঙ্গ হিসেবে এ বার পুজোর আগে উদ্যোক্তাদের কাছে প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিকজাত সামগ্রী ব্যবহার না করার আবেদন করা হয়েছিল।
যদিও থার্মোকল কিংবা প্লাস্টিকজাত সামগ্রীর ব্যবহার এ বারও মণ্ডপসজ্জা থেকে শুরু করে পংক্তিভোজন— সর্বত্রই দেখা গিয়েছে। পুরসভার এক কর্তা জানিয়েছিলেন, প্লাস্টিক বন্ধে আবেদন করা হয়েছিল। পংক্তিভোজনের সময়ে থার্মোকলের ব্যবহার হলে সেই আবর্জনা পুরকর্মীরা সরিয়ে নিয়ে যাবেন না। উদ্যোক্তাদেরই তা সরাতে হবে। পুরসভার দাবি, শেষ পর্যন্ত সেই কড়া পদক্ষেপ করতে হয়নি। পুজোর প্রথম দিকে প্লাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার হলেও পরে তা অনেকটাই বন্ধ হয়েছে।
মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানার কথায়, ‘‘পুজোর প্রথম পর্যায়ে আবর্জনা সরাতে গিয়ে থার্মোকল কিংবা প্লাস্টিক দেখা গিয়েছে। কিন্তু পরে তা হয়নি। সেই ছবিটাই বলে দিচ্ছে যে, উদ্যোক্তারা পুরসভার আবেদনে সাড়া দিয়েছেন।’’
যদিও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, পুজোর সময়ে উদ্যোক্তারা থিম প্রতিযোগিতায় দূষণ রোধে নানা বার্তা দিলেও, পুজোর চার দিনে পংক্তিভোজন থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচিতে প্লাস্টিক, থার্মোকলের যথেচ্ছ ব্যবহার করেছেন।
সল্টলেকের এ কে ব্লকের পুজো উদ্যোক্তা রাজা বণিক জানান, পংক্তিভোজনে থার্মোকল ব্যবহার হয় না। আগে পাতলা প্লাস্টিকের গ্লাসে দর্শনার্থীদের জল দেওয়া হত। এ বারে প্লাস্টিকের গ্লাস বন্ধ করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও ফ্লেক্সের ব্যবহার কমিয়ে তাঁরা এলইডি স্ক্রিন চালু করেছেন। এমনকি প্লাস্টিক বিরোধী প্রচারও করা হয়েছে। এফডি ব্লকের পুজো উদ্যোক্তা সৌমিত্র মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার ব্যয়বহুল। তা সত্ত্বেও প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।’’ তবে উদ্যোক্তাদের একাংশের বক্তব্য, উৎপাদন বন্ধ করতে পারলে প্লাস্টিকের ব্যবহারও বন্ধ হবে।
পুরকর্তাদের একাংশের কথায়, ‘‘যে ভাবেই হোক প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে অন্য দিকে খরচ কমিয়ে প্লাস্টিক কিংবা থার্মোকলের বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।’’ তবে আশার কথা, এ বারে বিধাননগর পুরএলাকায় পুজোর সময়ে সচেতনতার প্রচারে সাড়া মিলেছে।