স্থপতি সায়ন্তন বসুর উদ্যোগে টাউন হলে চলছে পুজোর মূর্তি গড়া থেকে ভাসান নিয়ে প্রদর্শনী। ফাইল ছবি
‘‘দুর্গাপুজোর বিশ্ব স্বীকৃতির এটা শেষ নয়। শুরু বলতে পারেন’’— বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টালা পার্কে দুর্গাপূজা আর্ট প্রিভিউ শোয়ের সূচনালগ্নে এ কথা বলেই কলকাতার আবেগকে ছুঁয়ে গেলেন ভারতে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি এরিক ফল্ট।
আজ, শুক্রবার বিশ্ববাংলা সম্মেলন কেন্দ্রে উৎসবের সৃজনশীল অর্থনীতি নিয়ে সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের ডাকে যোগ দেবেন ইউনেস্কোর কর্তারা। বণিকসভা ফিকি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার সর্বভারতীয় কর্তারাও থাকবেন। দুর্গাপূজা আর্ট প্রিভিউ শোয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সর্বভারতীয় ডিরেক্টর আর্ট জোনাথন কেনেডি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে বিভিন্ন উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অর্থনীতি ও শিল্পের প্রসারের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলব। বিভিন্ন সংগ্রহশালা বা জাদুঘরগুলিকেও এর শরিক করা যেতে পারে।’’
ইউনেস্কো কর্তা এরিকের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজো হল একুশ শতকের আদর্শ উৎসব। এর আসল জোর সামাজিক বন্ধন ও সবাইকে নিয়ে চলার চেষ্টায়।’’ এরিকের ব্যাখ্যা, ‘‘বিশ্বে সবাইকে সমান ভাবে নিয়ে চলার চেষ্টায় ইউনেস্কোর নির্দিষ্ট করা উন্নয়নের সুস্থায়ী লক্ষ্যমাত্রার (সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল্স) সঙ্গে দুর্গাপুজো তাল মিলিয়ে চলছে।’’
দুর্গাপুজোকে দেওয়া ইউনেস্কোর ‘ইনট্যানজিব্ল কালচারাল হেরিটেজ’ (আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য) তকমার ফলিত প্রয়োগই এ বার টালা প্রত্যয়ের পুজোয় করেছেন শিল্পী সুশান্ত পাল। বাঁশ, তানপুরা, ঘণ্টাধ্বনির মৃদু সঙ্গীত মূর্ছনায় এ দিন সেই মণ্ডপ ছোট ধাতব পর্দা সরিয়ে ঘুরছে। মণ্ডপের চলমান রূপের সঙ্গে জড়িয়ে মানুষের স্পর্শ। একই রকম ‘আর্ট ইন মোশন’ বা জীবন্ত শিল্পের মূর্ত রূপ বাগুইআটির অর্জুনপুর আমরা সবাই-এর পুজোতেও। সেখানে ৭০-৭৫ জন নরনারী সেলাই করছেন, নাচছেন, ঢাক-ঢোল বাজাচ্ছেন। ভবতোষ সুতারের থিম সৃষ্টি দেখে এরিক বলেন, ‘‘এমন শিল্পের আরও বেশি স্বীকৃতি প্রাপ্য।’’ দুর্গাপুজো শিল্পে ধর্মের উর্ধ্বে ওঠার চেষ্টাকেই তুলে ধরেছেন এই শোয়ের উদ্যোক্তা ধ্রুবজ্যোতি বসুরা।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘এ হল কলকাতার বিশ্ব উৎসব।’’ পর্যটন সচিব সৌমিত্র মোহনের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজো জীবনের উৎসব তা বোঝা গেল।’’ প্রিভিউ শোয়ে ২২টি মণ্ডপে অবশ্য যেতে পারেননি এরিক। স্থপতি সায়ন্তন বসুর উদ্যোগে টাউন হলে চলছে পুজোর মূর্তি গড়া থেকে ভাসান নিয়ে প্রদর্শনী।