প্রতীকী ছবি
ছয় শহর থেকে কলকাতায় উড়ান আসার উপরে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা পুজোর মাসেও থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনও কিছু জানায়নি রাজ্য সরকার। আজ, মঙ্গলবারের পরে হাতে মাত্র এক দিন। উড়ান সংস্থাগুলির অভিযোগ, এখনও কিছু না জানায় টিকিট বিক্রি শুরু করা যাচ্ছে না। এমনকি, ঠিক করা যাচ্ছে না উড়ানসূচিও।
নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী এখন দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, পুণে, আমদাবাদ এবং নাগপুর— এই ছ’টি শহর থেকে সপ্তাহে তিন দিন কলকাতার সরাসরি উড়ান চালানো যাচ্ছে। এই দিনগুলি হল সোম, বুধ এবং শুক্রবার। অক্টোবর থেকে সপ্তাহে সাত দিনই ওই ছয় শহরের সঙ্গে কলকাতার সরাসরি উড়ান যোগাযোগ থাকবে কি না, তা এখনও পর্যন্ত কেউই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছেন না।
প্রশাসন, ট্র্যাভেল এজেন্ট, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বা উড়ান সংস্থা— এ নিয়ে কারও কাছেই নির্দিষ্ট উত্তর নেই। ফলে সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা। এখন কলকাতা থেকে সপ্তাহে সাত দিনই ওই ছ’টি শহরে উড়ান যাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা রয়েছে শুধু উড়ান আসা নিয়ে। ফলে ভিন্ রাজ্য থেকে পুজোর সময়ে শহরে ফেরার জন্য টিকিট কাটা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। অক্টোবরের গোড়ায় দিল্লি থেকে কলকাতায় আসতে চান শ্রেয়ান দত্তচৌধুরী। গুরুগ্রামে কর্মরত শ্রেয়ান শনিবারের কাজ শেষ করে আসতে চান। কিন্তু এখন শনিবার দিল্লি থেকে কলকাতার উড়ান নেই। তাই ঝুঁকি না নিয়ে শুক্রবারের টিকিট কাটবেন বলে ঠিক করেছেন তিনি। অপেক্ষা করলে আবার টিকিটের দাম দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে।
গত ৬ জুলাই থেকে ওই ছয় শহরের সঙ্গে কলকাতার সরাসরি উড়ানের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্য। বলা হয়েছিল, ওই ছ’টি শহরে কোভিড সংক্রমণ বেশি। তাই সেখান থেকে যাত্রীরা এলে কলকাতায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অগস্টের শেষ সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। জানানো হয়, পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তাহে তিন দিন উড়ান নামতে পারবে। কোন তিন দিন, তা ঠিক করবে উড়ান সংস্থাগুলি। কিন্তু এই শিথিলতা যে শুধু এক মাসের জন্য, তেমন কিছু বলা হয়নি। ফলে প্রশাসনের একটি অংশের অনুমান, অক্টোবরেও এই নিষেধাজ্ঞা চলতে পারে। পুরোটাই নির্ভর করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের উপরে।
এখনকার পরিস্থিতির নিরিখে উড়ান সংস্থার কর্তারা মনে করছেন, যে তিন দিন এখন ওই ছয় শহর থেকে কলকাতায় সরাসরি উড়ান আসছে তা বহাল থাকবে। দিনের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ বা সাত হতে পারে। টিকিট অবশ্য সাত দিনেরই বিক্রি হচ্ছে। যাত্রীরা তা কাটছেনও। কিন্তু শেষে যদি নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি না ওঠে, তা হলে যে সব দিনে নিষেধাজ্ঞা থাকবে, সেই দিনের টিকিট বদলে অন্য দিন করা হবে। অথবা আগের নিয়ম মতো, যাত্রীর টিকিটের টাকা উড়ান সংস্থার ঘরে থেকে যাবে। যাত্রী সেই টাকায় অন্য টিকিট কাটতে পারবেন।
ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির কথায়, ‘‘সিস্টেমে সাত দিনেরই টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। আমরাও বিক্রি করছি। কলকাতা থেকে ওই ছয় শহরে যাওয়া নিয়ে তো সমস্যা নেই। সমস্যা হচ্ছে ফেরার উড়ান নিয়ে।’’
ট্র্যাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা মানব সোনি অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেবে বলে আমরা খবর পেয়েছি। আশা করছি, চলতি মাসের শেষেই সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।’’