যাত্রী-সুরক্ষা নিয়ে রাজ্য সরকারের শর্ত মানতে নারাজ উব্র। সরকার কেন শর্ত চাপাবে, সেই প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছে ওই অ্যাপ-ক্যাব সংস্থা। এর মধ্যেই ফের ওই সংস্থার এক চালকের বিরুদ্ধে যাত্রীদের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠল।
অভিযোগ পাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট চালককে অবশ্য বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল উব্র। সংস্থার এক মুখপাত্র সোমবার বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তের পরে আমরা চালকের মোবাইলে অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের নিজস্ব তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই চালক উব্র-এর গাড়ি চালাতে পারবেন না।’’
রবিবার রাতে বিরাটি থেকে টালিগঞ্জ যাওয়ার জন্য উব্র ভাড়া নেন নবারুণ দেব। তিনি এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। গাড়িতে ওঠার পরেই চালক তাঁদের মাঝপথে পার্ক সার্কাসে নেমে যেতে চাপ দিতে থাকেন। ফেসবুকে উব্র-কে অভিযোগ করে নবারুণ বলেন, ‘‘ইকবাল নামের ওই চালক মত্ত ছিলেন। তাঁর হুমকি শুনেও আমি ও আমার সহযাত্রী পায়েল মজুমদার, সঞ্জয় ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী বীথি ঘোষ নামতে চাইনি। তখন ওই চালক আবার হুমকি দেন। তাঁর পাড়ায় নিয়ে গিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে ভয় দেখান। গাড়িতে থাকা শিশু ও মহিলারা আতঙ্কে কাঁপতে থাকেন। শেষে বিমানবন্দর পেরোনোর পরেই আমাদের নামিয়ে দেওয়া হয়।’’ সোমবার সকালে চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান নবারুণ। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে উব্র দাবি করেছে।
উব্রের এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘যাত্রী-নিরাপত্তা আমাদের কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রথমেই চালককে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিটি যাত্রার শেষে যাত্রীদের কাছ থেকে চালক সম্পর্কে যে মূল্যায়ন চাওয়া হয়, তা ঠিকমতো দিলে আমাদের পক্ষে চালকদের সম্পর্কে ধারণা তৈরিতে সুবিধা হয়। অ্যাপে যে ‘প্যানিক বাটন’ রয়েছে, সেটিতে জানালেও আমাদের ‘রেসপন্স টিম’ ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টা তৈরি থাকে।’’
আরও পড়ুন: আডবাণীকে ‘ভারতরত্ন’ দিতে তৎপর মোদী সরকার
উব্র এ কথা জানালেও নবারুণদের অভিযোগ, যাত্রা শেষের পরে গাড়ির নম্বর পর্যন্ত উব্র দিতে চায়নি। ফলে, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেননি তাঁরা। অ্যাপে সব সময়ে এসওস বাটনটি পাওয়া যায় না বলেও অভিযোগ। উব্র-এর বক্তব্য, আইনি জটিলতার কারণে তারা গাড়ির নম্বর দেয় না। যাত্রীরা থানায় অভিযোগ জানালে পুলিশকে সব তথ্যই দেওয়া হয়। আর মোবাইলে অ্যাপ আপডেট করলে এসওএস বাটন এসে যাবে বলে জানান ওই মুখপাত্র।
রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে হেতু অ্যাপ-ক্যাবের সঙ্গে মানুষের সুরক্ষার প্রশ্ন জড়িত, তাই সরকার ওই সব সংস্থার উপরে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করেছিল। তার মধ্যে চালকদের বিস্তারিত তথ্য পুলিশকে দিয়ে যাচাই করানোর শর্তও ছিল। কিন্তু শুধু সিসি ক্যামেরা নিয়ে আপত্তি থাকায় ওই সংস্থা চুক্তি মানতে নারাজ।’’ ওই কর্তার যুক্তি, অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাটি শর্ত মেনে লাইসেন্স নিলে লাভবান হবেন মানুষই।
মাথায় রাখুন
গাড়িতে উঠে চালকের ছবি, নাম মিলিয়ে নিন।
গাড়িতে ওঠার পরেই ‘চাইল্ড-লক্’ নিষ্ক্রিয় করে দিন।
অ্যাপে ‘এসওএস’ বোতাম থাকলে তা টিপুন।
বিপদে পড়লে ‘১০০’ ডায়ালে ফোন করুন।
যাত্রা শেষে অ্যাপ মারফত পরিবহণ সংস্থাকে চালকের সম্পর্কে মতামত দিন।