প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের সকালে কোলাঘাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে পুলিশকে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, ধাক্কা মারার পরেও গাড়ি না থামিয়ে গতি বাড়িয়ে বেরিয়ে যান তাঁরা। পরে অবশ্য গাড়ির চালক ও তাঁর সঙ্গী পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম আকাশ হালদার ও তিতাস মিত্র। বৃহস্পতিবার সাতসকালে ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাগান থানার কাঁকুড়গাছি মোড়ে। গাড়ির ধাক্কায় কর্তব্যরত সার্জেন্ট বিশ্বজিৎ সাহার কপালের পাশাপাশি কাঁধের হাড়েও চোট লেগেছে। তাঁকে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশের অনুমান, দু’জনেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন।
এ দিন সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছিল। উল্টোডাঙার হাডকো মোড়ের কাছে মোতায়েন করা হয়েছিল একটি বড় বাহিনীকে। সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ সেখানকার পুলিশকর্মীরা দেখেন, একটি গাড়ি তীব্র গতিতে এগিয়ে আসছে। তাঁরা সেটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। বার বার হাত দেখানো সত্ত্বেও গাড়িটি থামেনি। গতি বাড়িয়ে বেরিয়ে যান চালক। খবর দেওয়া হয় পরের মোড়গুলিতে থাকা পুলিশকর্মীদের।
কাঁকুড়গাছি মোড়ে থাকা উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট বিশ্বজিৎবাবু গাড়িটিকে আটকাতে যান। কিন্তু অভিযোগ, গাড়িটি এ বারেও থামেনি। ওই সার্জেন্টকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায় সেটি। বিশ্বজিৎবাবু ছিটকে পড়েন। কপালে চোট লাগে। কাঁধের হাড়ও ভেঙেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
এর পরে ওই গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ খোঁজ পায় মালিকের। ডিসি (ইএসডি) অজয় প্রসাদ জানিয়েছেন, গাড়ির মালিক তিতাস মিত্র। তাঁর বাড়ি পর্ণশ্রী থানা এলাকার বাসুদেবপুর রোডে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বন্ধু আকাশ হালদার। তাঁর বাড়ি বেহালার বীরেন রায় রোড (ওয়েস্ট) এলাকায়।
গাড়িটি তিতাসের হলেও এ দিন স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন আকাশ। পর্ণশ্রী থানার সাহায্য নিয়ে ফুলবাগান থানার পুলিশ দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, সরকারি কর্মীকে আঘাত করা ছাড়াও খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। আটক করা হয়েছে গাড়িটিকে। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় দু’জন জানিয়েছেন, বুধবার রাতে তাঁরা কোলাঘাট গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ফিরছিলেন এ দিন সকালে।
এর আগের একটি সাপ্তাহিক লকডাউনে প্রমোদভ্রমণে বেরিয়েছিলেন এক যুবক ও তাঁর সঙ্গী। পুলিশ আটকাতে যাওয়ায় উত্তর পঞ্চান্নগ্রামের কাছে ট্র্যাফিক গার্ডের এক কনস্টেবল ও এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে ধাক্কা মেরেছিল ওই গাড়ি।
লকডাউনে বার বার নিয়ম ভেঙে বেরোনো এই ধরনের বেপরোয়া গাড়ি রীতিমতো চিন্তায় রেখেছে পুলিশকে। বিশেষ করে গাড়িগুলিকে আটকাতে গেলে তারা যে ভাবে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যাচ্ছে, তাতে যে কোনও দিন বড় অঘটন ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের।