পথ দুর্ঘটনা রুখতে শহর জুড়ে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন-হোর্ডিংয়ে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচারই সার। তবু নিরাপত্তা বা সচেতনতার হাল যে সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে, তা ফের প্রমাণ হল মঙ্গলবার। সিআইটি রোডে এ দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ সিগন্যাল না-মেনে রাস্তা পেরোতে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় দুই কিশোরী। এর জেরে এলাকায় উত্তেজনার পাশাপাশি আধ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধও করা হয়। যানজটে নাকাল হন নিত্যযাত্রীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এন্টালি থানা এলাকার ফিলিপস মোড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। কনভেন্ট রোড থেকে ফিলিপ্স মোড় থেকে বাঁ-দিকে ঘুরে পদ্মপুকুরের দিকে যাচ্ছিল একটি গ্যাস সিলিন্ডার-ভর্তি ট্রাক। সে সময়েই ওই মোড়ে চার জন রাস্তা পেরোচ্ছিলেন। ট্রাকটি এসে তাঁদের মধ্যে দুই কিশোরীকে পিষে দিয়ে চলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকটি রীতিমতো সিগন্যাল মেনেই যাচ্ছিল। পথচারীরা তার মধ্যেই রাস্তা পেরোতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম ওই দুই কিশোরীকে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, মৃত দুই কিশোরীর নাম নাহিদা আনজুম (১৭) এবং শাহিন পরভিন (১৬)। দু’জনেই স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানান, এ দিন বিবির বাগান এলাকার ওই দুই কিশোরীকে পিষে দেওয়ার পরেই ট্রাকের চালক ট্রাক ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা দৌড়ে তাঁকে ধরে ফেলে পুলিশের হাতে তুলে দেন। লরিচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে লরিটিকেও। এর পরেই আনন্দ পালিত ও সিআইটি রোডের মোড়ে স্থানীয় বাসিন্দারা অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের সক্রিয়তার অভাবেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অবরোধের জেরে যান চলাচল ব্যাহত হয়। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে অবরোধকারীদের তুলে দেয়।
পথ নিরাপত্তা বাড়াতে গত জুলাই মাস থেকেই প্রচার চালাচ্ছে সরকার। যানবাহনকে নিয়ন্ত্রণ করতে আইন কঠোর করার কথাও ভাবা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর ব্যাপারে এখনও যে পুলিশ সক্রিয় নয় এবং তা বাড়েওনি, এ দিনের ঘটনা তা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল বলে মনে করছেন লালবাজারের কর্তাদের একাংশ।
মৃত্যু বাইকআরোহীর। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক মোটরবাইক আরোহীর। সোমবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরবেড়িয়া মোড়ে। মৃতের নাম শুভব্রত মজুমদার। বাড়ি গড়িয়ায়। পুলিশ জানায়, সোমবার শুভব্রতবাবু বন্ধু অমরেন্দ্র গায়েনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরবাইকে সরবেড়িয়ায় কাজে গিয়েছিলেন। কাজ শেষে ক্যানিং হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সরবেড়িয়া মোড়ে একটি লরিকে পাশ কাটাতে গিয়ে নির্মীয়মাণ ঢালাই রাস্তা থেকে বেরিয়ে আসা লোহার রডে ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়েন তাঁরা। লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শুভব্রতবাবুর। আহত অমরেন্দ্রবাবু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ লরিটিকে আটক করলেও চালক পলাতক।