প্রতীকী ছবি।
আচমকা বিকল হয়ে পড়া ট্যাক্সিকে ঠেলে রাস্তার মাঝখান থেকে সরাচ্ছিলেন চালক। তাঁকে সাহায্য করছিলেন দুই ট্র্যাফিক-কর্মী। সেই সময়ে পিছন থেকে আসা লরির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ওই চালক। বৃহস্পতিবার রাতে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে এই দুর্ঘটনার পরে তাঁকে ফেলে চলে যাননি নিমতা সাব ট্র্যাফিক গার্ডের ওই এএসআই এবং সিভিক ভলান্টিয়ার। ট্যাক্সিচালককে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে পরিবারের লোকজন আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো— সবই করেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, বুধবার মাঝরাতে বারাসতে রাস্তায় পড়ে থাকা যুবককে উদ্ধার না করে তাঁর উপর দিয়ে একাধিক গাড়ি চলে যাওয়ার মতো অমানবিকতার সাক্ষী থেকেছিল শহর। সেখানে বৃহস্পতিবারের ঘটনায় উঠে এসেছে সেই শহরেরই মানবিক মুখ।
পুলিশ জানায়, নিউ টাউনের বাসিন্দা বিশ্বরূপ বিশ্বাস ওই রাতে ১১টা নাগাদ ট্যাক্সি নিয়ে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। ঢালাই কারখানা স্টপে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে যায় ট্যাক্সিটি। সিগন্যাল সবুজ হলেও গাড়ি চালু না-হওয়ায় রাস্তায় নেমে পড়েন বিশ্বরূপ। জানলা দিয়ে এক হাতে স্টিয়ারিং ধরে ট্যাক্সি ঠেলে চালু করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন এএসআই অশোক বিশ্বাস ও সিভিক ভলান্টিয়ার বিপ্লব দাস।
সেই সময়ে পিছন থেকে আসা একটি লরি ধাক্কা মারে বিশ্বরূপকে। তাঁর পায়ের পাতা পিষে দিয়ে চম্পট দেয়। তা দেখে সিগন্যাল লাল করে অন্য গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন ওই পুলিশকর্মীরা। দ্রুত আর একটি ট্যাক্সিতে বিশ্বরূপকে উত্তর দমদম পুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, অবিলম্বে ওই চালককে আর জি করে স্থানান্তরিত করতে হবে। তখন অশোক এবং বিপ্লব খবর পাঠান বিশ্বরূপের পরিজনেদের।
উত্তর দমদম পুর হাসপাতালের চিকিৎসক শিবশঙ্কর শূর বলেন, ‘‘ওই পুলিশকর্মীরা ঠায় দাঁড়িয়ে চিকিৎসায় তদারকি করেন। আহত ব্যক্তির পরিজনেদের আসতে দেরি হচ্ছিল। দ্রুত চিকিৎসা শুরুর প্রয়োজন জেনে ওই পুলিশকর্মীরাই তাঁকে আর জি করে নিতে তোড়জোড় শুরু করেন।’’
সেখানকার পুলিশ আউটপোস্টে বিষয়টি জানিয়ে রাখেন নিমতা থানার ওসি শিবু ঘোষও। এরই মধ্যে বিশ্বরূপের পরিজনেরা এসে তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যান।
শুক্রবার ওই হাসপাতালে শুয়ে বিশ্বরূপ বলেন, ‘‘ওই দুই পুলিশকর্মী আমাকে সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার না করলে হয়তো অন্য গাড়ি পিষে দিত।’’