জুলাইয়ে খুলতে পারে দুই সেতু

পুলিশ এবং পুরসভা সূত্রের খবর, মাঝেরহাটে সেতু ভেঙে পড়া এবং টালিগঞ্জের করুণাময়ী সেতুতে গর্ত তৈরি হওয়ার পরেই টালিগঞ্জের করুণাময়ী সেতুর পাশে ওই নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৯ ০২:২৩
Share:

টালি নালার উপরে প্রায় শেষের পথে সেতু তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র

জুলাইয়ে চালু হতে পারে টালি নালার উপরের নতুন দু’টি সেতু।

Advertisement

মাঝেরহাট সেতু বিপর্যয়ের পরে গত বছরের শেষে বেহালা এবং ঠাকুরপুকুরে যাতায়াতের সমস্যার সমাধানে টালি নালার উপরে দু’টি সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। প্রথমে অস্থায়ী সেতু তৈরির কথা হলেও পরে গুরুত্ব বুঝে স্থায়ী সেতুরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জানুয়ারি মাসে ওই দুই সেতুর কাজও শুরু হয়। সেতু দু’টি তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সূত্রের দাবি, জুলাই মাসের শুরুতেই ওই দুই সেতু দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। সেতু তৈরির কাজ জোর কদমে চললেও নির্মীয়মাণ দু’টি সেতুর দুই পাড়ের রাস্তার সম্প্রসারণের কাজ এখনও শেষ হয়নি।

পুলিশ এবং পুরসভা সূত্রের খবর, মাঝেরহাটে সেতু ভেঙে পড়া এবং টালিগঞ্জের করুণাময়ী সেতুতে গর্ত তৈরি হওয়ার পরেই টালিগঞ্জের করুণাময়ী সেতুর পাশে ওই নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। টালি নালার উপরে সেতুটির এক দিকে রয়েছে সিরিটি শ্মশান, অন্য দিকে টালিগঞ্জ উত্তমকুমার সরণি। বেহালার দিক থেকে আসা সব গাড়ি ওই সেতু ধরে এসে করুণাময়ী সেতুর নীচ দিয়ে এসে পৌঁছবে উত্তমকুমার সরণিতে। যা সোজা চলে যাবে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর দিকে। অন্য সেতুটি জুড়ে রাখবে নিউ আলিপুরের বি এল শাহ রোড এবং টালিগঞ্জের ইজাজাতুল্লা রোডকে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই দু’টি সেতুর তৈরির জন্য খরচ পড়ছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। যা রাজ্য সরকার বহন করছে।

Advertisement

দু’টি সেতুর নির্মাণস্থলে গিয়ে দেখা যায়, করুণাময়ী ব্রিজের পাশে তৈরি হওয়া সেতুর স্তম্ভের কাজ শেষ। তার উপরে সেতুর দু’পাশের সংযোগরক্ষাকারী লোহার ডেক বসানোর কাজ চলছে। দু’টি ডেক বসানো হয়ে গিয়েছে। একটি বাকি রয়েছে। তৃতীয় লোহার ডেক বসানোর জন্য বড় ক্রেন আনা হয়েছে। তা বসানো হলেই আগামী সপ্তাহ থেকে সেতুর লোহার ডেকের উপরে কংক্রিটের ঢালাই এবং রাস্তা তৈরি হবে। দ্রুত গতিতে ওই কাজ চলছে। শ্রমিকেরা জানান, জুন মাসের মধ্যেই ওই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।

টালিগঞ্জ আনোয়ার শাহ রোডের মোড় থেকে প্রায় পাঁচশো মিটার দূরে টালি নালার উপরে তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় সেতুটি। সেটিই বি এল শাহ রোড এবং টালিগঞ্জের ইজাজাতুল্লা রোডের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করবে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর ঢালাইয়ের মূল কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দু’পাশের কাজ বাকি রয়েছে। তবে দু’টি জায়গাতেই টালি নালার উপরে কোনও স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি সেতুরই টালিগঞ্জের দিকের রাস্তা চওড়া করার জন্য একটি ক্লাবের জমির কিছু অংশ নেওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে। পুরসভার তরফে সেই কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্লাব কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন মিটার জায়গা ছেড়ে দেবে বলে সূত্রের দাবি। এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘ওই রাস্তা চওড়া করার কাজ শুরু হয়েছে। বাকি কাজও জমি পেলেই শুরু হবে।

ওই দু’টি সেতু চালু হয়ে গেলে বেহালার দিক থেকে আসা ছোট গাড়ি করুণাময়ী সেতু কিংবা টালিগঞ্জ সেতুর যানজট এড়িয়ে অনায়াসে পৌঁছে যাবে টালিগঞ্জে। কিন্তু দু’টি রাস্তাই একমুখী এবং এক লেনে গাড়ি চলবে বলে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছে।

ট্র্যাফিক পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ওই দু’টি সেতুর সংযোগকারী রাস্তা চওড়া কিংবা তিন লেন করা না হলে ওই এলাকার যানজটের সমস্যার সুরাহা হবে না। তাই পুলিশের তরফে ফের পুরসভার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে যাতে ওই রাস্তা দু’টি আরও বেশি চওড়া করা হয়। একই সঙ্গে একমুখী গাড়ি চলার ফলে স্থানীয়দের ফের সমস্যার মুখে পড়তে হবে বলে বাসিন্দারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement