পুজোয় এমন ভিড় সামলাতে কোমর বাঁধছে কলকাতা পুলিশ। ফাইল চিত্র।
পুজোর মুখেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল কলকাতা পুলিশের দুই কর্মীর। এ দিকে সোমবার, তৃতীয়া থেকেই দুর্গা পুজোর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী নামবে রাস্তায়। পুজোর ভিড় সামলে বাহিনীর সদস্যদের কোভিড থেকে দূরে রাখাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সকালে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বাহিনীর সশস্ত্র শাখার পঞ্চম ব্যাটালিয়নের আধিকারিক সিদ্ধান্তশেখর দে-র। বেশ কয়েক দিন ধরেই তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ দিন সকালেই মৃত্যু হয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের অন্য এক আধিকারিক হোমবাহাদুর থাপার। তিনি জুলাই মাস থেকে দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন কোভিড আক্রান্ত হয়ে। কয়েক দিন আগে তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু ফুসফুসে অন্য সংক্রমণ হয়। সেই অবস্থাতেই তাঁকে বাড়িতে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তাঁর সহকর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ফের তাঁর পরিস্থিতির অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ দিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের ১৩ জন কর্মীর মৃত্যু হল কোভিড আক্রান্ত হয়ে। আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি কর্মী।
এই পরিস্থিতিতেই সোমবার থেকে পুজো উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা শুরু হবে শহরে। শুক্রবারেই কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা আধিকারিকদের সতর্ক করেছেন সংক্রমণ নিয়ে। সূত্রের খবর, নগরপাল বাহিনীর সদস্যদের, সব ধরনের সতর্কতা নিতে বলেছেন সংক্রমণ এড়াতে। তিনি বলেন,‘‘কাজ করুন। কিন্তু সংক্রমিত হবেন না।” ভিড় এবং দর্শনার্থীদের থেকে প্রয়োজনীয় দূরত্ববিধি বজায় রেখে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শনিবারও নগরপাল সমস্ত থানার আধিকারিকদের হোয়াটস্অ্যাপ করে ফের সতর্ক করেন। জানানো হয়েছে, মাস্ক, স্যানিটাইজার থেকে শুরু করে ফেস শিল্ডের মতো কোভিড রোখার সরঞ্জাম বিভাগীয় ডিসিদের তত্ত্বাবধানে রাখা থাকছে পুলিশ কর্মীদের ব্যাবহারের জন্য। তবে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘পুজোর সময় ভিড় থেকে দূরত্ব রেখে কাজ করা কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।” তিনি ইঙ্গিত দেন, বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা শঙ্কিত পুজোর ভিড়় নিয়ে। কারণ তৃতীয়া থেকে রাস্তায় অতিরিক্ত বাহিনী থাকবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ থেকে পুলিশ-জনগণ সমন্বয়ের কাজে। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে যে সমস্ত আক্রান্ত পুলিশ কর্মী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, তাঁদের একটা বড় অংশই কাজে যোগ দেওয়ার মতো শারীরিক সক্ষমতা ফিরে পাননি।” পুলিশ কর্তাদের আশঙ্কা, পুজোর ভিড়ে ফের বাহিনীর সদস্যরা সংক্রমিত হলে পরিস্থিতি ঘোরাল হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন: ‘করোনার শিখর পেরিয়ে এসেছে দেশ, ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে অতিমারি’
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার পুজোর ভিড় সামলানোর জন্য প্রায় ৬০০ অতিরিক্ত বাহিনীর সঙ্গে থাকবে ২৬টি পুলিশ কন্ট্রোল রুম(পিসিআর) ভ্যান, ১৩টি অতিরিক্ত হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, ৩১টি র্যাপিড সিটি পেট্রল বাইক, ৫২টি নজর মিনার, অতিরিক্ত ৭৩টি সিসি ক্যামেরা সহ ১৬টি অ্যাম্বুল্যান্স। ভিড়ের বহর দেখে পরবর্তী দিনগুলোতে বাড়ানো হবে বাহিনীর সংখ্যা।