অগ্নিগর্ভ: চামড়া কারখানায় আগুন।
টিফিনের সময়ে খেয়েদেয়ে কারখানার একটি ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। হঠাৎ সেই ঘরেই আগুন লেগে পুড়ে গেল চামড়ার গোটা কারখানাটি। এই ঘটনায় দু’জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার ওই কারখানায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহতদের নাম মন্টু মণ্ডল ও সাগর দাস। দু’জনকেই বাইপাস লাগোয়া একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মন্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। সাগরের অবস্থা স্থিতিশীল।
ওই কারখানার এক শ্রমিক আমির বক্স বলেন, ‘‘আমাদের ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত টিফিন থাকে। অনেকে খেতে বাইরে গিয়েছিলেন। কেউ কেউ কারখানার ভিতরেই খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। যাঁরা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তাঁরাই প্রথমে আগুন দেখতে পান।’’ স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখে ওই ঘরের শ্রমিকেরা হুড়মুড় করে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময়ে কোনও ভাবে মন্টু ও সাগর পড়ে যান। পরে তাঁদের অন্য শ্রমিকেরাই বাইরে বার করে আনেন। কিন্তু তত ক্ষণে ওঁদের শরীরের বেশ কিছুটা অংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দমকলকে খবর দেওয়ার দশ মিনিটের মধ্যে একটি ইঞ্জিন এলেও কিছু ক্ষণেই সেটির জল শেষ হয়ে যায়। পরের ইঞ্জিনটি আসতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। তাই আগুন নেভাতে দেরি হয়। ফিরোজ বক্স নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয়েরাই শ্রমিকদের বাঁচাতে কারখানার দোতলার জানলা দিয়ে উদ্ধার করতে ঢুকি। ভিতরে তখন দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। কারখানার ভিতরে থাকা অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার আগেই কারখানার পুরো দোতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’’ স্থানীয়েরাই অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে মন্টু ও সাগরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ঘটনায় আহত এক শ্রমিক। বুধবার, লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই চামড়ার কারখানার দোতলার বিশাল ঘরটি একেবারেই পুড়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই কিছু আধপোড়া জিনিস শ্রমিকেরা বার করে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দমকলের আধিকারিকেরা জানান, ছ’টি ইঞ্জিন দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে থাকা দমকলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথম দমকলের ইঞ্জিনের জল শেষ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। ওই দমকলের জল শেষ হওয়ার পরেই পাম্পের সাহায্যে পাশের কারখানা থেকে জল নিয়ে কাজ চালানো হয়।এর কিছু ক্ষণ পরেই পরপর চলে আসে পরের দমকলের গাড়ি।’’ ওই আধিকারিক জানান, আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।কারখানায় অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক মতো ছিল কি না, তাও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।