পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি রক্তমাখা ব্লেড মিলেছে ঘটনাস্থল থেকে। অলঙ্করণ : তিয়াসা দাস
অকৃতদার দুই ভাই একসঙ্গে থাকতেন। দু’জনের বয়স পঁয়ষট্টির আশেপাশে। বুধবার দক্ষিণ কলকাতার গরফা এলাকার দোতলার ফ্ল্যাট থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দু’জনেরই হাত-পায়ের শিরা কাটা। এক জনের দেহ ঝুলছিল সিলিং ফ্যান থেকে। অন্য জনের দেহ পড়েছিল বিছানায়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, দুই ভাই আত্মহত্যা করেছেন। তবে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে তারা কিছু বলতে নারাজ।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম পার্থ এবং গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁরা গরফার ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। এ দিন সকালে ওই বহুতলের অন্য বাসিন্দারা তাঁদের ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেখে, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে নাম পার্থবাবুর দেহ। হল রুমে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে নাইলনের দড়ি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস ছিল তাঁর। তাঁর একটি হাত এবং পায়ের শিরা কাটা ছিল। গলাতেও ছিল ক্ষতচিহ্ন। গৌতমবাবুর দেহ পড়েছিল বিছানায়। তাঁরও হাতের এবং পায়ের শিরা কাটা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি রক্তমাখা ব্লেড মিলেছে ঘটনাস্থল থেকে। ঘর থেকে বিভিন্ন নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে।
দেহ দু’টি উদ্ধার করে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ গরফা থানায় ফোন করে দুই ভাইয়ের সাড়া না পাওয়ার বিষয়টি জানান বহুতলের এক বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, পার্থ-গৌতমবাবুর আয়ের উৎস বলতে তেমন কিছু ছিল না। পারিবারিক সম্পত্তি বেচেই দিন কাটত তাঁদের। গরফা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দু’জনেরই বয়স আনুমানিক ৬৫ বছর হবে।
এই ঘটনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন। এটা কি আত্মহত্যার ঘটনা? যদি তাঁরা আত্মহত্যা করে থাকেন, তা হলে কেন করলেন? নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? দু’জনেরই হাত-পায়ের শিরা কাটা ছিল। পার্থবাবুর দেহ ঝুলছিল। তা হলে কি তাঁর শিরা কাটেন গৌতম? তার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন? না কি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? সবটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: আইনজীবী খুনে ১০ মাস পরে জামিন স্ত্রীর
আরও পড়ুন: নাগেরবাজার বিস্ফোরণ এখনও রহস্য