ফাইল চিত্র।
পর পর দুই রাতে শহরের রাস্তায় দৌরাত্ম্য দেখা গেল বেপরোয়া মোটরবাইক চালকদের। যার জেরে দক্ষিণ কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার এবং জখম হয়েছেন এক জন পুলিশকর্মী। এর মধ্যে এক জন বাইকচালক এক সিভিক ভলান্টিয়ারের গালে কামড়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত বাইকচালকদের মধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার রাতের ঘটনাটি ঘটেছে কসবা থানা এলাকার নস্করহাটে। পুলিশ জানায়, ওই রাতে এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন কসবা থানার পুলিশকর্মীরা। রাত আড়াইটে নাগাদ তাঁরা একটি মোটরবাইককে বেপরোয়া গতিতে পিকনিক গার্ডেনের দিকে যেতে দেখেন। দুই আরোহীর কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা। পুলিশকর্মীরা বাইকটি দাঁড় করিয়ে নথিপত্র দেখতে চাইতেই চালক অরুণাংশু বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন বলে অভিযোগ। এক পুলিশকর্মী জানান, অভিযুক্ত চালক ঠিক মতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। তিনি মত্ত অবস্থায় রয়েছেন কি না, তা যাচাই করতে চালককে হাসপাতালে যেতে বলায় তিনি বেঁকে বসেন এবং কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে থাকেন। এরই মধ্যে তাঁর সঙ্গে থাকা মহিলাকে বাড়িতে পৌঁছে দেন পুলিশকর্মীরা।
পুলিশ জানায়, অরুণাংশুকে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তিনি প্রথমে পুলিশের গাড়ির চালক, সিভিক ভলান্টিয়ার গৌতম হালদারের হাত মুচড়ে দেন। তাঁকে বাঁচাতে অন্য এক সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল মুখিয়া এগিয়ে এলে অরুণাংশু তাঁর খুতনিতে কামড়ে রক্ত বার করে দেন বলে অভিযোগ। জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রাহুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে বাহিনীর অন্য সদস্যেরা এসে অভিযুক্তকে আটক করে প্রথমে হাসপাতালে এবং পরে থানায় নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জখম সিভিক ভলান্টিয়ার অভিযোগ দায়ের করলে অরুণাংশুকে গ্রেফতার করে কসবা থানার পুলিশ।
লালবাজার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাটি ঘটে লেক থানা এলাকার যাদবপুর থানা মোড়ে। সেখানে নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিলেন যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের দু’জন অফিসার ও চার জন কনস্টেবল। রাত ২টো নাগাদ তাঁরা দেখেন, একটি মোটরবাইকে চেপে তিন জন জীবনানন্দ সেতুর দিক থেকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের দিকে আসছেন। কারও মাথাতেই হেলমেট নেই। ট্র্যাফিক কনস্টেবল সুজিত মজুমদার বাইকটি থামাতে বলেন। কিন্তু অভিযোগ, থামার বদলে চালক বাইক নিয়ে সোজা ওই পুলিশকর্মীকেই ধাক্কা মারেন। ধাক্কার অভিঘাতে মাটিতে পড়ে যান সুজিত এবং ওই বাইকচালকও। বাকি দুই আরোহী পালিয়ে যান। পরে অবশ্য চালক এবং এক জন আরোহীকে আটক করে পুলিশ। জখম পুলিশকর্মী সুজিত এবং বাইকচালক মনোজ ঘোষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সুজিতের মুখে আঘাত লেগেছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চালক অবশ্য সেখানে চিকিৎসাধীন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত চালক-সহ আরোহীরা সকলেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। মনোজের বাড়ি গরফা থানা এলাকায়। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় আগের কোনও অভিযোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।