প্রতীকী ছবি।
রেলকর্মী পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম সুব্রত মাইতি এবং শঙ্কর হালদার। সুব্রতর বাড়ি গঙ্গাসাগরে। শঙ্কর বারুইপুরের বাসিন্দা।
তদন্তকারীরা জানান, সুব্রত নিজেকে বজবজ রেল স্টেশনের কর্মী পরিচয় দিয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের রাসবিহারী শাখায় ভুয়ো পরিচয়পত্র, প্যান কার্ড, বেতনের ভুয়ো শংসাপত্র-সহ সম্পত্তির বিবরণ জমা দিয়েছিল। তার বিনিময়ে ঋণ নিয়েছিল প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা। আর এক অভিযুক্ত শঙ্কর নিজেকে প্রোমোটার পরিচয় দিয়ে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই গড়িয়াহাট শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ঋণ নিয়েও সময়ে তা শোধ না করায় ব্যাঙ্কের তরফে ওই দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। নির্মাণকাজের যে ঠিকানা ব্যাঙ্কে দেওয়া হয়েছিল, সেই ঠিকানায় গিয়ে ব্যাঙ্ককর্মীরা জানতে পারেন, সেখানে কোনও নির্মাণকাজই হচ্ছে না! এমনকি, ব্যাঙ্কে দেওয়া মোবাইল নম্বরটিও ছিল বন্ধ। তার পরেই লালবাজারে অভিযোগ দায়ের করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, সুব্রত আদৌ রেলকর্মী নয়। পুরো বিষয়টি ভুয়ো বুঝতে পেরে দু’জনের ছবি ও মোবাইলের সূত্র ধরে অভিযানে নামেন তাঁরা।
সোমবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মল্লিকপুর থেকে ধরা হয় সুব্রতকে। জানা যায়, আদতে গঙ্গাসাগরের বাসিন্দা ওই যুবক ঠিকানা পাল্টে থাকছিল মল্লিকপুরে। তাকে রা করে শঙ্করের খোঁজ পাওয়া যায়।
কী ভাবে চলত প্রতারণা?
পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে শঙ্করকে দিয়ে একটি ভুয়ো নির্মাণ সংস্থা খোলা হয়েছিল। পরে সেই সংস্থার নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গড়িয়াহাট শাখায়। ভুয়ো নির্মাণ সংস্থার থেকে ফ্ল্যাট কেনার জন্যই গৃহঋণের আবেদন জানিয়েছিল সুব্রত। অন্য দিকে, প্রোমোটার সেজে ব্যাঙ্ককর্মীদের বোকা বানিয়েছিল শঙ্কর।
ব্যাঙ্কের ওই অ্যাকাউন্টে ঋণের পুরো টাকা ঢোকা মাত্রই বেপাত্তা হয়ে যায় দু’জন। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঋণের আবেদন করার সময়ে নিজেকে রেলকর্মী প্রমাণ করতে বজবজ স্টেশনে চেয়ার-টেবিল পেতে বসে থাকত সুব্রত। ধৃতদের প্রতারণার কৌশল দেখে মনে হচ্ছে, এই চক্রে আরও কয়েক জন জড়িত। তাদের খোঁজ চলছে।’’