প্রতীকী ছবি।
প্রায় দশ দিন ধরে নিখোঁজ সোদপুরের বাসিন্দা এক তরুণ। পরিবারের লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই তরুণের এক বন্ধু ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, নিখোঁজ তরুণকে দু’টুকরো করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও সেই দেহ উদ্ধার হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোদপুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ সংলগ্ন জয়প্রকাশ কলোনির বাসিন্দা রাহুল ঝা (১৮) গত ১ ডিসেম্বর দুপুরে পুরসভায় কাজ আছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তার পর থেকে আর তাঁর খোঁজ নেই। রাহুলের বন্ধু বাপ্পা কর এবং তার সঙ্গী সুশান্ত নন্দীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে ধৃতেরা। ব্যারাকপুরের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দমন) অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘তদন্তে জানা গিয়েছে, রাহুলকে খুন করে দেহ লোপাট করতে গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’
পরিবার সূত্রের খবর, পেশায় গাড়িচালক রাহুল আধার ও প্যান কার্ড নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে বলে গিয়েছিলেন, ফিরে এসে স্নান করে খাবেন। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও ফেরেননি। মোবাইলেও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। ২ ডিসেম্বর সকালে নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা। পুলিশ জানায়, বাপ্পার ফোন খারাপ হয়ে যাওয়ায় নিজের একটি ফোন তাকে ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন রাহুল। ওই দিন বিকেলে এক যুবককে দিয়ে সেই ফোনটি রাহুলের বাড়িতে পাঠায় বাপ্পা। ওই ফোনের কল রেকর্ডিং থেকে রাহুলের পরিজনেরা শুনতে পান, বাপ্পা তার স্ত্রীকে বলছে, ‘রাহুল আমার সঙ্গে রয়েছে। ওকে বেঙ্গল কেমিক্যালের জঙ্গলে নিয়ে যাচ্ছি।’ তাতেই সন্দেহ বাড়ে নিখোঁজ যুবকের পরিজনদের। বিষয়টি তাঁরা পুলিশকে জানান।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাহুলের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব বাপ্পার। সেই সূত্রেই ওই যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল রাহুলের। তা নিয়ে অশান্তি চলছিল। বৃহস্পতিবার বেঙ্গল কেমিক্যাল এলাকা থেকেই বাপ্পা ও সুশান্তকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের শুক্রবার ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।