কেউ বেশি লোক লাগিয়ে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলতে চাইছেন। ফাইল ছবি
কলকাতার দুর্গাপুজোর মণ্ডপগুলি ঘুরে দেখতে পারে ইউনেস্কো। দুর্গাপুজোর স্বীকৃতি-উদ্যাপন মঞ্চে উপস্থিত ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবার এই ইঙ্গিত দেওয়ার পরেই তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু পুজো কমিটির মধ্যে। কেউ বেশি লোক লাগিয়ে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলতে চাইছেন। কেউ আবার রাত-দিন কাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা কোন কোন মণ্ডপে ঘুরবেন, সেই তালিকায় নাম তুলতেও পড়ে গিয়েছে হুড়োহুড়ি। অনেকেরই ধারণা, সেখানে নাম তুলতে পারলেই পরের বার থেকে মিলবে আন্তর্জাতিক স্পনসর।
এ বার মহালয়া পড়েছে চলতি মাসের ২৫ তারিখ। ওই দিন থেকেই পুজোর উদ্বোধন শুরু করার কথা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতোই কাজ এগোচ্ছিল। কিন্তু ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ পরে দলবল নিয়ে তাঁরা ফের আসছেন। এতেই আরও আগে কাজ শেষ করতে নেমে পড়েছেন পুজোর উদ্যোক্তারা।
গিরিশ পার্ক চোরবাগান সর্বজনীনের পুজোকর্তা জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘২০ তারিখের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর জন্য বাড়তি লোকজনকে কাজে লাগানো হচ্ছে।’’ সমাজসেবী সঙ্ঘের পুজোকর্তা অরিজিৎ মৈত্র বললেন, ‘‘পাড়ার লোকের আপত্তি রয়েছে বলে রাতে মণ্ডপে কাজ বন্ধ রাখি আমরা। কিন্তু এখন থেকে রাতেও কাজ হবে।’’ চেতলা অগ্রণীর পুজোকর্তা সমীর ঘোষও বললেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকে তিন সপ্তাহ মানে ২২ তারিখ। সময় নেই বেশি। কাজ দ্রুত শেষ করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’
‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ সূত্রের খবর, শহরের বড় ৩০টি পুজোর মধ্যে কোনগুলি ইউনেস্কোর গন্তব্য তালিকায় রাখা হবে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। এক ফোরাম-সদস্যের কথায়, ‘‘তালিকায় থাকতে অনেকেই নেতা-মন্ত্রীদের কাছে তদ্বির শুরু করেছেন। এই হুড়োহুড়ির বড় কারণ, ইউনেস্কোর পা পড়লেই পরের বার থেকে আন্তর্জাতিক স্পনসরের হাতছানি!’’
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু যদিও বললেন, ‘‘অনেকেই কাজ শেষ করে উঠতে পারবেন বলে মনে হয় না।’’ সুরুচি সঙ্ঘের পুজোকর্তা কিংশুক মৈত্রেরও দাবি, ‘‘দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য চাপ তো দিচ্ছি, কিন্তু হবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর কর্তা গৌতম নিয়োগী বললেন, ‘‘পঞ্চমীতেই আমাদের উদ্বোধন হয়। তার আগে কেউ এলে কাঠামোর বেশি কিছু দেখাতে পারব বলে মনে হয় না।’’