অবশেষে সেই দৌড় শুরু হতে চলেছে। প্রতীকী ছবি।
নির্মাণকাজ শুরুর প্রায় এক দশক পরে আজ, বৃহস্পতিবার জোকা থেকে তারাতলার মধ্যে প্রথম মেট্রো ছুটতে দেখবেন বেহালার মানুষ। গত দেড় মাস ধরে জোকা থেকে তারাতলার মধ্যে সাড়ে ছ’কিলোমিটার পথে মহড়া দৌড়ের প্রস্তুতি শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে সেই দৌড় শুরু হতে চলেছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে ওই দৌড় শুরু হওয়ার কথা। গত জুলাই মাসেই উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর নোয়াপাড়া কারশেড থেকে একটি নন এসি রেক নিয়ে আসা হয়। ট্রেলারের মাধ্যমে সড়কপথে আলাদা আলাদা করে সেই নন এসি মেট্রোর আটটি কোচ এনে তা জোকার কারশেডে জুড়ে রেক তৈরি করা হয়েছে। আপাতত ওই রেক ছুটিয়েই মহড়া দৌড় চলবে। রেক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কারশেডের একটি অংশের কাজ তড়িঘড়ি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। যদিও সুবিশাল কারশেড সম্পূর্ণ হতে এখনও অনেক সময় লাগবে। আপাতত জোকা থেকে তারাতলার মধ্যে ছ’টি স্টেশন নিয়ে পরিষেবা শুরু করতেই মহড়া দেওয়া হবে। ওই ছ’টি স্টেশন হল জোকা, ঠাকুরপুকুর, শখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা , বেহালা বাজার এবং তারাতলা।
সপ্তাহখানেক আগে এই পথে মেট্রোর তৃতীয় লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ হয়েছে। তার পরেও গত এক সপ্তাহ ধরে চলেছে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আজ সকালে ট্রেন চালানোর আগেও রেকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং লাইন পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। প্রথম বার ট্রেনের গতি খুব কম রেখেই মহড়া দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। আপাতত তিন দিন মহড়া চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জমি-জটের কারণে দীর্ঘ সময় প্রকল্পের কাজ নানা পর্বে ব্যাহত হওয়ায় পরিষেবা কবে থেকে শুরু হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছিল। ওই মেট্রোপথে এখনও আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু হওয়ার কাজ বাকি। আপাতত সিগন্যাল ব্যবস্থা ছাড়াই একটি রেক ব্যবহার করে ‘ওয়ান ট্রেন সিস্টেমে’ সেখানে মেট্রো চলবে। এই পদ্ধতিতে প্রান্তিক স্টেশন জোকা থেকে একটি রেক ছেড়ে বিভিন্ন স্টেশন হয়ে তারাতলা পৌঁছবে। তার পরে তারাতলা থেকে ফিরতি পথে জোকা আসবে। ওই রেকের আগে বা পরে কোনও ট্রেন চলবে না। মহড়া দৌড় সফল হলে এই একই পদ্ধতি মেনে নতুন এসি রেক আনিয়ে যাত্রী পরিষেবা শুরু করা হবে। অক্টোবর মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে সাড়ে ছ’কিলোমিটার মেট্রোপথে যাত্রী পরিষেবা খুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, জোকা-বি বা দী বাগ পথের প্রথম অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হতে চললেও দ্বিতীয় পর্বের কাজ এখনও অনেকটাই বাকি। এর পরে মাঝেরহাট এবং মোমিনপুরে স্টেশন নির্মাণ পর্ব চলছে। তবে মোমিনপুর থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত মাটির নীচের সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। সব বাধা কাটিয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পাশ দিয়ে এই সুড়ঙ্গ তৈরির ছাড়পত্র মিলেছে।