ফাইল চিত্র
আমপানের আগে কয়েকটি বরোয় গাছ গণনা ছাড়াও গাছগুলি কী অবস্থায় রয়েছে এবং কোন ধরনের গাছের আধিক্য কোথায় বেশি, তা নিয়ে একটি ‘পাইলট প্রজেক্ট’ গ্রহণ করেছিলেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ওই প্রকল্প পর্যালোচনা করেই এলাকাভিত্তিক বনসৃজন ও পরিবেশ উন্নয়নের কর্মসূচি নেওয়া হবে। আমপানের আগেই দক্ষিণ কলকাতার একটি বরোর রিপোর্টও জমা পড়েছিল। তার পরেই আমপান আসায় এলাকার সামগ্রিক সামগ্রিক সবুজায়নের ছবি পাল্টে যায়। তার জেরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গাছের সংখ্যা ও অবস্থা জানতে কী করা প্রয়োজন, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ নতুন করে ফের সমীক্ষা সময়সাপেক্ষ।
এই প্রকল্পের সাফল্য দেখেই অন্যান্য বরোয় গাছের সমীক্ষা শুরু করবে পুরসভা। অন্য দিকে, আমপানের পরে বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে বনসৃজনের কাজ শুরু করেছে পুরসভা।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা উদ্যান দফতরের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, “আমপানের অনেক আগেই শহরের বিভিন্ন বরো এলাকায় গাছের অবস্থা কী তা জানতে একটি সমীক্ষার প্রয়োজন ছিল। সেই কারণেই তিনটি বরোয় বহিরাগত সংস্থাকে দিয়েই এই সমীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত হয়। এখনও পর্যন্ত একটি বরোর গাছের সমীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। আমপানের আগে বাকিগুলির কাজ কতটা এগিয়েছিল জানি না। তবে সমীক্ষার মাধ্যমে সবুজায়নের সামগ্রিক ছবি ধরা পড়লে শহর জুড়ে পরিকল্পনামাফিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে সুবিধা হয়।”
পুর কর্তৃপক্ষ জানান, এই ধরনের সমীক্ষার জন্য ১, ৮ এবং ৬ নম্বর বরো এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তার মধ্যে আমপানের আগেই ৮ নম্বর বরো এলাকার গাছের সমীক্ষা হয়ে তার রিপোর্ট জমা পড়েছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানান।
পুরসভার উদ্যান দফতর সূত্রের খবর, আমপান ছাড়াও ছোটখাটো ঝড় বা বৃষ্টিতে শহরে বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে যায়। মূলত বড় গাছ পড়ে শহরে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তা ছাড়াও শহরে সবুজায়নের জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য কতটা বজায় থাকে এবং গাছ থাকার ফলে কত ধরনের পাখি আসে, তা জানতেই এই সমীক্ষা। কয়েক বছর আগেই পুরসভার উদ্যান দফতর রাজ্য বন দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাছের সমীক্ষা করার পরিকল্পনা করেছিল। বিভিন্ন কারণে তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি।
আমপানের পরে ৮ নম্বর বরোয় যেখানে গাছের সমীক্ষা করা হয়েছিল তার অবস্থা জানতে উদ্যান দফতর কী ভাবছে?
উদ্যান দফতরের এক আধিকারিক জানান, ফের সমীক্ষা করা সম্ভব নয় বলেও কোন কোন গাছ পড়েছে তা চিহ্নিত করতে পারলেই এলাকার আমপান পরবর্তী সবুজায়নের সঠিক চিত্র পাওয়া যেতে পারে। অন্য দু’টি বরোর ক্ষেত্রে পুরো সমীক্ষা না হওয়ার ফলে আমপান পরবর্তী সবুজায়নের রিপোর্ট পেতে অসুবিধা হবে না বলেও তিনি আশাবাদী। তবে যেখানে নতুন করে ইতিমধ্যেই বনসৃজন হচ্ছে সেই বিষয়টিও সমীক্ষায় রাখা হবে। এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট বহিরাগত সংস্থা এবং পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।