Accident

বাড়ির উপরে ভেঙে পড়ল গাছ, জখম তিন শিশু

এ দিন সকালে ট্যাংরা রোড সংলগ্ন ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে ওই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০১:৪৬
Share:

বিপত্তি: এ ভাবেই চারটি বাড়ির উপরে ভেঙে পড়ে গাছটি। বৃহস্পতিবার, ট্যাংরা রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বিপজ্জনক গাছ না কাটা নিয়ে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে নাগরিকদের অভিযোগ অনেক দিনের। প্রতি বছরই বড় বড় গাছ পড়ে ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালেও ট্যাংরা রোডে একটি বিশালাকৃতির বিপজ্জনক গাছ চারটি বাড়ির উপরে ভেঙে পড়ল। দুর্ঘটনায় আহত হয় তিনটি শিশু। যার জেরে ট্যাংরা রোডে অবরোধে বসেন স্থানীয় মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশও।

Advertisement

এ দিন সকালে ট্যাংরা রোড সংলগ্ন ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে ওই ঘটনা ঘটে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল ওই গাছটি। বারবার বলা সত্ত্বেও গাছটি পুরসভা কাটেনি। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতার মেয়র পারিষদ (বস্তি উন্নয়ন, পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার জানান, আড়াই মাস আগে ওই গাছটি কাটার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও গাছটি কেন কাটা হয়নি তা স্পষ্ট নয় তাঁর কাছেও। তিনি জানান, কেন গাছ কাটা হয়নি তার তদন্ত করে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। পাশাপাশি তিনি জানান, ওই এলাকায় বিপজ্জনক গাছ কতগুলি রয়েছে তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হবে।

প্রশ্ন উঠেছে, স্থানীয় কাউন্সিলর গাছ কাটার নির্দেশ দেওয়ার পরেও কেন কাজ হল না? সেই কাজ যে হয়নি তা দেখার দায়িত্বও তো পুরসভার।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গাছ কাটতে লোকজন এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা গাছ কাটতে পারেননি। গাছ কাটার জন্য বাসিন্দাদের কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে। কাউন্সিলর জানান, লিখিত অভিযোগ পেলেই যথোপযুক্ত জায়গায় জানানো হবে।

এ দিন এলাকার ১২/৩ নম্বর বাড়ির উপরে বিরাট ওই বটগাছটি ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় চারটি বাড়ি। আতঙ্কে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন বাসিন্দারা। সে সময়ে দু’টি শৌচাগারে ছিল দু’টি শিশু। আচমকা গাছ পড়ার শব্দে ছুটে আসেন বাসিন্দারা। চন্দন সর্দার নামে এক বাসিন্দা জানান, আচমকা গাছটি ভেঙে পড়ে। তার চার বছরের শিশুপুত্র অনুজ সর্দার শৌচাগারে আটকে পড়ে। তাকে কোনও ভাবে সেখান থেকে টেনে বার করা হয়। ঘটনায় শিশুটি সামান্য জখমও হন। শৌচাগার থেকেই উদ্ধার করা হয় অঙ্কিত ঘোষ নামে আর একটি শিশুকেও। পাশাপাশি ঋদ্ধিমা হাজরা নামে আরও এক শিশুও জখম হয়। কাউন্সিলর জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির মেরামতি করবে পুরসভা।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গাছটি এক বছর আগেই পাতা ঝরে গিয়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাঁরা জানান, আগে রাস্তার ধারে নর্দমা ছিল। এখন পাইপলাইন হয়ে গিয়েছে। নর্দমার জায়গায় রাস্তা তৈরি হচ্ছে। সম্ভবত সেই কাজের জেরে রাস্তার ধারের মাটি সরে যায়। সেই কারণেই গাছটির ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে। গাছটি বিপজ্জনক ভাবে হেলে ছিল। স্থানীয় পুলিশ থেকে পুর-প্রশাসনকে একাধিক বার জানানো হয়েছিল। লিখিত ভাবে কাউন্সিলরকেও জানানো হয়। কিন্তু কাজ হয়নি।

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে ঝড়ে একাধিক গাছ পড়ার পরে সমীক্ষা করে কয়েক হাজার গাছ বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করেছিল পুরসভা। কিন্তু সেই তালিকা কোথায় কিংবা গাছগুলির বর্তমান অবস্থা কী তার সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য মেলেনি পুরসভার তরফে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement