প্রতীকী ছবি।
কলকাতা বিমানবন্দরে ঢোকার মুখেই পুলিশ দেখে গাড়ির মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলেন এক যুগল। তার পরে উল্টো দিকের রাস্তায় গাড়ি ছোটাতে শুরু করেন। পিছু নিয়েছিল পুলিশও। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ রাস্তা, সে রাস্তা, অলিগলি দিয়ে ধাওয়া করে শেষমেশ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে ওই দু’জনকে পাকড়াও করে নিউ আলিপুর থানার পুলিশ।
পুলিশের দাবি, সুদীপ্তা ও অভিষেক দাস নামে ওই যুগল প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত। হেলিকপ্টারে কেদারনাথে পৌঁছনোর টিকিট জাল করে এক মহিলা পর্যটন ব্যবসায়ীকে ঠকানোর অভিযোগে তাঁদের খোঁজা হচ্ছিল। মঙ্গলবার বিমানে চেপে কলকাতা ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। লেক টাউনের ক্যানাল রোডে ওই যুগলের একটি ভ্রমণ সংস্থার অফিসও ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্বাতী ঘোষ নামে নিউ আলিপুরের এক পর্যটন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁর ১৭ জন পর্যটকের জন্য উত্তরাখণ্ডের ফাটা থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত যাওয়ার হেলিকপ্টারের টিকিট কিনতে গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে অভিষেক ও সুদীপ্তার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। এই বাবদ ওই যুগলকে ৫ লক্ষ ২২ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তাঁকে ওই সংস্থা টিকিটও দিয়ে দেয়। কিন্তু পরে ওই পর্যটকেরা মহিলাকে জানান, টিকিটগুলি ভুয়ো। শেষমেশ স্বাতী নিজের টাকা খরচ করে ওই পর্যটকদের ফের টিকিট কেটে দেন। এর পরেই তিনি নিউ আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে জানা গিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকেই লেক টাউনের ওই অফিসটি বন্ধ। স্থানীয়েরা পুলিশকে জানান, অনেকেই প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে ওই অফিসে এসেছিলেন। কিন্তু দুই ব্যবসায়ীই বেপাত্তা। এর পরে ওই যুগলের মোবাইলে নজরদারি শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই দু’জন সাত বার ফোনের সিম কার্ড বদলেছেন।
পুলিশ সূত্রের দাবি, এই নজরদারি চালাতে চালাতেই জানা যায়, ওই যুগল পালানোর ছক কষছেন। সেই মতো ওত পাতেন তদন্তকারীরা। দু’জনকে গ্রেফতার করার পরে তাঁদের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালানো হয়েছে। কম্পিউটার ও কিছু নথিপত্র বাজেয়াপ্ত হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, শুধু নিউ আলিপুরের ব্যবসায়ী নন, আরও অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রতারণা করা অর্থের পরিমাণ বহু লক্ষ টাকা।