ছবি: সংগৃহীত।
করোনা আবহেও প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ যাত্রী এসপ্লানেডের দূরপাল্লার বাস টার্মিনাস থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করছেন। সেই ভিড়ে দূরত্ব-বিধি কার্যত শিকেয় উঠেছে বলেই অভিযোগ। সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ওই ডিপোর সরকারি পরিবহণ নিগমের এক কর্মীরও। তাই দায়িত্ব গ্রহণ করেই বুধবার দুপুরে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের এসপ্লানেড বাস টার্মিনাস ও কাউন্টার ঘুরে দেখলেন নিগমের চেয়ারম্যান দীপ্তাংশু চৌধুরী।
এ দিন তাঁকে সমস্যার কথা জানান নিগমের কর্মী, আধিকারিক এবং যাত্রীরা। দূরত্ব-বিধি মেনে টিকিট কাউন্টারে দাঁড়ানোর অসুবিধে ছাড়াও শৌচালয়ের দুরবস্থার কথা তাঁকে জানান যাত্রী, কর্মী এবং আধিকারিকেরা। এসপ্লানেড থেকে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস ছাড়াও একাধিক বেসরকারি সংস্থার দূরপাল্লার বাস ছাড়ে। এখন স্বাভাবিক ট্রেন পরিষেবা বন্ধ। ফলে এই ধরনের বাসে যাত্রীর ভিড় অনেক বেশি। অল্প ব্যবধানে পর পর বাস ছাড়ে। অনেক যাত্রী এক জায়গায় ভিড়ও করেন। সম্প্রতি ভিড় কমাতে রাজ্য পরিবহণ নিগম দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন গন্তব্যের বাসের জন্য কিয়স্ক চালু করেছেন। তাতেও পুরো সমস্যা মেটেনি। কারণ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুরে যাতায়াতের জন্য টিকিটের চাহিদা বাড়ছে। যে জন্য এল-২০ ও শহিদ মিনার সংলগ্ন টার্মিনাসেও ভিড় বাড়ছে।
সমস্যার কথা স্বীকার করে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান বলেন, “ওই অঞ্চল সেনাবাহিনীর অধীন হওয়ায় বড় মাপের স্থায়ী নির্মাণের সমস্যা রয়েছে। অস্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করে কী ভাবে জরুরি প্রয়োজন মেটানো যায়, তা ভাবা হচ্ছে।” পাশাপাশি যাত্রী-সচেতনতার উপরেও জোর দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এখনও যাত্রীদের একটি বড় অংশ যত্রতত্র থুতু ফেলছেন, মাস্ক না-পরা এবং দূরত্ব-বিধি না মানার মতো বেপরোয়া মনোভাবও দেখা যাচ্ছে তাঁদের মধ্যে। সেই পরিস্থিতি বদলের জন্য প্রচার চালানো হবে বলে তিনি জানান। এসপ্লানেড থেকে বেরিয়ে পরে তিনি করুণাময়ী ও বেলঘরিয়ার ডিপো এবং সল্টলেক স্টেডিয়ামে বাসকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন।
শহরের পথে বাসের ঘাটতি মেটাতে গত দু’মাস ধরে ৩০০টির মতো অতিরিক্ত বাস চালাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। ওই সব বাসচালকের সল্টলেক স্টেডিয়ামে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য পরিবহণ নিগমের পক্ষ থেকে ওই বাসচালকদের খাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ভিন্ জেলা থেকে নিগমের কর্মীদের বিভিন্ন প্রয়োজনে শহরে আসতে হয়। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে সরকারি অতিথিশালা তৈরির পরিকল্পনা হচ্ছে বলেও জানান দীপ্তাংশুবাবু।