সার দিয়ে গাড়ি ছুটছে হাওড়া সেতুর দিকে। হঠাৎই পাশের রাস্তার লাল সিগন্যাল উপেক্ষা করে এগিয়ে এল একটি মোটরবাইক। শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ বড়বাজারে এই দৃশ্য দেখে মোটরবাইকটি আটকেছিলেন এক ট্রাফিক কনস্টেবল। আর তাতেই চটে যান বাইক চালক ও এক আরোহী। পুলিশের সঙ্গে শুধু বচসা করেই থেমে থাকেননি তাঁরা। রাস্তা থেকে কংক্রিটের চাঙড় তুলে ওই পুলিশকর্মীকে মারেন বলেও অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, কংক্রিটের চাঙড়ের আঘাতে জখম হন চিত্তরঞ্জন নায়েক নামে জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের ওই কনস্টেবল। ভেঙে গিয়েছে তাঁর ওয়্যারলেস সেটটিও। গ্রেফতার হন মোটরবাইক চালক মহম্মদ মেহরুফ খান। পরিবহণ ব্যবসায়ী মেহরুফের বাড়ি বৌবাজারের বলাই দত্ত লেনে। তবে মোটরবাইক নিয়ে তাঁর সঙ্গী চম্পট দিয়েছেন। তাঁর খোঁজ করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এ দিন মহাত্মা গাঁধী রোড ও রবীন্দ্র সরণির মোড়ে ডিউটি করছিলেন চিত্তরঞ্জনবাবু। হাওড়ামুখী গাড়ির চাপ বেশি থাকায় সে দিকেই বেশিক্ষণ সিগন্যাল খোলা রাখতে হচ্ছিল। হঠাৎই মোটরবাইক নিয়ে মেহরুফ ও তাঁর সঙ্গী সিগন্যাল উপেক্ষা করে মহাত্মা গাঁধী রোড পেরিয়ে জোড়াবাগানের দিক থেকে কলুটোলার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই তাঁদের আটকান ওই কনস্টেবল।
পুলিশের অভিযোগ, এর পরেই মেহরুফ ও তাঁর সঙ্গী পুলিশকর্মীর সঙ্গে বচসা জুড়ে দেন। তখন রাস্তার পাশ থেকে একটি কংক্রিটের চাঙড় তুলে পুলিশকর্মীকে মারতে যান তাঁরা। চিত্তরঞ্জনবাবু বাধা দিলে চোট লাগে তাঁর হাতে। ভেঙে যায় ওয়্যারলেস যন্ত্রটি। আশপাশের লোকজনই মেহরুফকে ধরেন। পরে বড়বাজার থানার পুলিশ আটক করে তাকে। পুলিশ জানায়, আহত চিত্তরঞ্জনবাবুকে মেডিক্যালে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বড়বাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তার ভিত্তিতেই মেহরুফকে ধরা হয়।
লালবাজার সূত্রে খবর, গত কয়েক মাসে আইনভঙ্গকারীরা বার বার ট্রাফিক পুলিশের উপর চড়াও হচ্ছে। পর্ণশ্রীতে গাড়ি পরীক্ষার সময়ে দুই পুলিশকর্মীকে মারা হয়েছিল। খিদিরপুরের রাস্তায় গাড়ি তল্লাশির সময়ে জুয়েল সাহো নামে এক তরুণ সার্জেন্টকে চাপা দিয়েছিল একটি ট্রাক। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেও একাধিক বার রাস্তায় আক্রান্ত হন ট্রাফিক পুলিশ কর্মীরা। সম্প্রতি পাটুলিতে এক সার্জেন্টকে ঘুঁষি মেরে পালাতে গিয়ে গ্রেফতার হন এক গাড়িচালক।