দখল: পড়ে রয়েছে ইমারতি দ্রব্য, দাঁড়িয়ে আছে সাইকেল ভ্যান। উত্তর দমদমের এম বি রোডের অবস্থা এখন এমনই। নিজস্ব চিত্র
কোথাও বসেছে বাজার, কোথাও আবার ইমারতি দ্রব্যের স্তূপ। কখনও বাজারের সামনে যত্রতত্র দাঁড় করানো থাকে গাড়ি, কখনও বড় বড় লরি, ট্রাক দাঁড় করিয়ে চলে ইমারতি দ্রব্যের ওঠানো-নামানো। আর এ সবের জেরে যানজটে ভোগান্তি বাড়ে মানুষের।
এই দুর্ভোগই উত্তর দমদম পুর এলাকার বাসিন্দাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। তাঁরা জানালেন, অনুষ্ঠান বা অন্য কোনও কারণে যান চলাচল বাড়লে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এম বি রোডের যান-যন্ত্রণাও বাড়ে। এই সমস্যার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়াটাই যেন দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় ফুটপাত নেই। নেই পার্কিংয়ের যথাযথ ব্যবস্থা। দু’ধারে রয়েছে কোথাও খোলা, কোথাও ঢাকা নর্দমা। উভমুখী গাড়ি চলাচলের মধ্যেও পথচারীদের হাঁটার জন্য সম্বল রাস্তাই। নিত্যদিনই ঝুঁকি নিয়ে তাঁদের চলাচল করতে হয় বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, রাস্তার ধারেই বসে একাধিক বাজার। ফলে বাজার ঘিরে মানুষ ও গাড়ির চাপও পড়ে ওই রাস্তার উপরে। অভিযোগ, এতে গাড়ির গতি শ্লথ হয়। বাম আমলেই বাজারের জন্য অন্যত্র পরিকাঠামো তৈরি করা হলেও বাজার রাস্তার ধার থেকে সরেনি বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, উভমুখী যান চলাচলের কারণে কোথাও কোনও গাড়ি দাঁড়ালেই যানজটের আশঙ্কা থাকে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের মোতায়েন করা হয়েছে। তাতে কিছুটা সুরাহা হলেও যানজটের সমস্যা রয়েই গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। গৌতম রায় নামে বেলঘরিয়ার এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘বৃষ্টিতে রাস্তা একেবারে ভেঙেচুরে গিয়েছিল। পরে মেরামত হলেও তার মান সন্তোষজনক নয়।’’
তবে পূর্ত দফতরের অধীন এম বি রোড শুধু নয়, ওই পুর এলাকার বিভিন্ন রাস্তা নিয়েই বাসিন্দাদের অভিযোগ রয়েছে। এই পুরসভার উপর দিয়েই গিয়েছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। সেই এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সংযুক্তিকরণের কাজ চলছে। ফলে এখন কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের অবস্থাও শোচনীয় বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
উত্তর দমদম পুরসভার সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস জানান, এম বি রোডের এই সমস্যা পুরনো। এলাকায় জনবসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। ওই রাস্তার উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘গত পুরবোর্ড সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করেছিল। এ বার পথচারীদের হাঁটার জন্য রাস্তার দু’ধারে নর্দমা সংস্কার করে ফুটপাত তৈরি করা ও রেলিং বসানোর মতো কাজে হাত দেওয়া হবে।’’ তিনি আরও জানান, রাস্তার ধারের বাজার নিয়েও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা হবে। রাস্তায় যান চলাচলের সমস্যা যাতে না হয়, সে দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে তাঁর দাবি।