নাগপাশ: নারদ-কাণ্ড নিয়ে বামেদের মিছিলে থমকে রাজপথ। বুধবার, মৌলালিতে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দুপুর থেকেই ধর্মতলার মোড়ে কোমর বেঁধেছিলেন কলকাতা পুলিশের ‘সেনাপতিরা’। শলা-পরামর্শ-পরিকল্পনাও চলছিল। কিন্তু বুধবার বিকেলে ‘যুদ্ধ’ শুরু হতেই বোঝা গেল, পরিস্থিতি ‘সেনাপতিদের’ অনুকূলে আর নেই। শেষমেশ মুখরক্ষা হল বটে। কিন্তু যুদ্ধে জয় হল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লালবাজারের একাংশ।
‘সেনাপতি’ বলতে কলকাতার সেন্ট্রাল ডিভিশনের বাছাই করা পাঁচ ওসি। আর যুদ্ধ আসলে নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বামেদের মিছিল। যার জেরে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটে ভুগেছে শহর। যানজটের বহর হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন বেলঘরিয়ার কান্তিভূষণ আচার্য। ধর্মতলায় যেতে গিয়ে শ্যামবাজার পেরোতেই যানজটের কবলে পড়েন। এ গলি-সে গলি ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে নাজেহাল হন তিনি।
লালবাজারের একাংশের বক্তব্য, এ দিন ছিল সেমিফাইনাল। আজ, বৃহস্পতিবার ফাইনাল ম্যাচ। নারদ-কাণ্ড নিয়ে শাসক দলের মহামিছিলের জেরেও যানজট হতে পারে। তা নিয়েও চিন্তায় ‘সেনাপতিরা’।
এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কয়েক হাজার লোক নিয়ে বামেদের মিছিল লেনিন সরণিতে ঢুকতেই তালগোল পাকিয়ে যায় ধর্মতলার যান চলাচল। পুলিশের খবর, মিছিল কিছু এগোনোর পরেই শিয়ালদহ এলাকায় এ জে সি বসু রোড, সিআইটি রোডে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করতে হয়। ফলে শিয়ালদহ থেকে মানিকতলা ও মৌলালি থেকে মল্লিকবাজার— সর্বত্রই গাড়ি আটকে পড়ে। বেনিয়াপুকুর থেকে সিআইটি রোড দিয়ে আসা গাড়িও আটকে যায়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাস্তার মাঝ দিয়ে মিছিল যাওয়াটাই এ শহরের দস্তুর। রাস্তার এক পাশ দিয়ে মিছিল গেলে ভোগান্তি কম হত।
সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার পরে শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। কিন্তু দুর্ভোগ কমেনি। রাত পর্যন্ত গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রের দাবি। লালবাজারের কর্তাদের একাংশ বলছেন, শহরের যান চলাচল এক বার তালগোল পাকিয়ে গেলে তা চট করে স্বাভাবিক হয় না। এ দিন মিছিল শেষ হওয়ার পরেই পুরোদমে গাড়ি চলাচল শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু তার প্রভাব কাটতেই রাত গড়িয়েছে।