ফাইল চিত্র।
নিষেধাজ্ঞা এবং নজরদারি এড়িয়ে গভীর রাতে মা উড়ালপুলে স্কুটি নিয়ে উঠে পড়েছিলেন দুই যুবক। পরে সায়েন্স সিটির কাছে গড়িয়া এবং সল্টলেকের দিকে বেঁকে যাওয়া দু’টি র্যাম্পের মাঝখানের গার্ডওয়ালে সজোরে ধাক্কা মারে তাঁদের স্কুটিটি। দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। ওই দুই যুবকের কারোর মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে অভিযোগ।
লালবাজার জানিয়েছে, ওই ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এক কনষ্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাময়িক ভাবে কাজে করতে নিষেধ করা হয়েছে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকেও। একই সঙ্গে ঘটনাস্থলে থাকা অপর এক কনস্টেবলের ভূমিকা কী ছিল তা-ও খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন পুলিশকর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সাসপেন্ড হওয়া পুলিশকর্মী ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ডে কর্মরত। সিভিক ভলান্টিয়ারও ওই গার্ডেই কর্মরত। অপর দিকে থানার এক পুলিশকর্মীর ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবার লালবাজারের কর্তারা ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, সাসপেন্ড হওয়া পুলিশকর্মীর কাছে ওই দিন কী হয়েছিল তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে লালবাজার সন্তুষ্ট না হওয়াতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাস খানেক আগে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলেও পুলিশকর্মীদের নজর এড়িয়ে সেখানে উঠেছিলেন দুই বাইকআরোহী। পরে উড়ালপুল থেকে পড়ে মারা যান এক যুবক।
গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে পার্ক সার্কাসের দিক থেকে মা উড়ালপুলে উঠেছিলেন সঞ্জয় রানা (২৫) এবং ছোট্টু দাস (২০) নামে ট্যাংরার পুলিন খটিক রোডের বাসিন্দা দুই যুবক। পুলিশ সিসিটিভি থেকে জানতে পারে দ্রুত গতির স্কুটিটি গড়িয়া এবং সল্টলেকের দিকে বেঁকে যাওয়া দু’টি র্যাম্পের মাঝখানের গার্ডওয়ালে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ছিটকে পড়ে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই দু’জনকে পুলিশকর্মীরা উদ্ধার করে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরের দিন সেখানেই সঞ্জয়ের মৃত্যু হয়। অপর যুবক এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, বছর তিনেক আগে রাতের শহরের উড়ালপুলগুলিতে পর পর বাইক দুর্ঘটনার ফলে রাত ১০ টা থেকে শহরের বেশ কয়েকটি উড়ালপুলে মোটরবাইক চলাচল নিষিদ্ধ হয়ে যায় লালবাজারের নির্দেশে। যার মধ্যে রয়েছে এ জে সি বসু রোড এবং মা উড়ালপুল। রাতের নির্ধারিত সময়ের পরে মোটরবাইক যাতে উড়ালপুলে না উঠতে পারে তার জন্য উড়ালপুলের দুই প্রান্তে তিন জন করে পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া রাস্তার মাঝখানে গার্ড রেল বসিয়ে দেওয়া হয় যাতে করে মোটরবাইক সহজে পুলিশকর্মীদের ফাঁকি দিয়ে উড়ালপুলে উঠতে না পারে। সাময়িক শাস্তির মুখে পড়া পুলিশকর্মীরা ঘটনার দিন মা উড়ালপুলের পার্ক সার্কাসের সাত মাথার প্রান্তে ডিউটিতে ছিলেন।
ট্র্যাফিক পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, শাস্তির মুখে পড়া পুলিশকর্মীরা জানিয়েছিলেন ঘটনার দিন অন্য গাড়ির আড়ালে ওই স্কুটিটি উড়ালপুলে উঠেছিল। তাই তাঁদের পক্ষে স্কুটিটি আটকানো সম্ভব হয়নি। যা পুলিশকর্তাদের বিশ্বাস হয়নি বলে লালবাজারে দাবি।