এই বাড়ি থেকেই ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। —ফাইল চিত্র।
মাথায় চারটি ও গলায় আটটি ক্ষতচিহ্ন। সোমবার গভীর রাতে তপসিয়া থানা এলাকার নিজের ঘরে খুন হওয়া অভিজিৎ রজকের (৩০) ময়না-তদন্তের রিপোর্টে দেহে মোট ১২টি ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, মৃত্যু নিশ্চিত করতে অভিজিতের গলা ও মাথায় একের পর এক ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত পুলিশ খুনের কিনারা করতে পারেনি।
মঙ্গলবার ভোরে তপসিয়া থানা এলাকার বামনপাড়ায় নিজের ঘরে অভিজিৎকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন তাঁর মা। তাঁর চিৎকারেই পড়শিরা ছুটে আসেন। পুলিশ এসে তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। পেশায় একটি হোটেলের কর্মী অভিজিৎ খুন হওয়ায় বিস্মিত বাসিন্দারা। স্থানীয়দের বক্তব্য, “অভিজিৎ ভাল ছেলে হিসাবেই এলাকায় পরিচিত। ওঁকে যে বা যারা খুন করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি হোক।”
মঙ্গলবার রাতে অভিজিতের মা ঊষা রজক তপসিয়া থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, অভিজিৎ যে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন সেখান থেকে দু’টি সাইকেল চুরি গিয়েছে। সম্ভবত চোরকে ছেলে দেখে ফেলায় তাঁকে দুষ্কৃতীরা মেরে ফেলেছে।
যদিও অভিজিতের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দেখে এক তদন্তকারীর বক্তব্য, “কেবল সাইকেল চুরি করতে আসা দুষ্কৃতীদের দেখে ফেলায় তাঁকে খুন হতে হয়েছে, এ কথা এত সহজে বলা যায় না। কারণ ময়না-তদন্তের রিপোর্ট দেখে খুনের পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে মনে হচ্ছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মঙ্গলবার বিকেল থেকে দফায় দফায় মৃতের মা, বাবা, কাকা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। অশোক রজক ও ঊষা রজকের দুই সন্তান। অভিজিৎ বড় ছেলে। ফোনে যোগাযোগ করা হলে বেসরকারি সংস্থার কর্মী অশোকবাবু বুধবার ধরা গলায় বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে যারা খুন করল, তাদের কঠোর সাজা হোক।”
এ দিনই ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেন হোমিসাইড বিভাগের আধিকারিকেরা। তাঁরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সূত্র খুঁজতে পরিজনেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”