ধর্মেন্দ্র সিংহ।
হাওড়ায় প্রোমোটার ধর্মেন্দ্র সিংহকে খুনের পিছনে আরও ‘বড় কোনও মাথা’ আছে বলে মনে করছে পুলিশ। ওই ঘটনায় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং এলাকার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত কয়েক জন দুষ্কৃতীর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, বটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার ওই ডাকসাইটে প্রোমোটারকে খুনের পিছনে প্রভাবশালী কেউ আছেন। তাঁর নির্দেশেই ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে খুন করা হয়েছে ধর্মেন্দ্রকে। পুলিশ এখন সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করেছে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে বটানিক্যাল গার্ডেন থানা এলাকার তিন নম্বর রেলগেট সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে এক সঙ্গীর সঙ্গে মোটরবাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন ধর্মেন্দ্র। সেই সময়েই সেখানে চলে আসে বাইক-আরোহী কয়েক জন দুষ্কৃতী। ধর্মেন্দ্রকে পর পর পাঁচটি গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। তদন্তকারীদের বক্তব্য, আত্মরক্ষার জন্য ধর্মেন্দ্র কোমরে সব সময়ে রিভলভার নিয়ে ঘুরতেন। সেই কারণে সুঠাম চেহারার ওই ব্যক্তিকে খুন করা যে স্থানীয় কোনও দুষ্কৃতীর পক্ষে কঠিন, তা জানত তাঁর শত্রুপক্ষ। তাই বাইরে থেকে ভাড়াটে খুনিদের আনিয়েই ধর্মেন্দ্রকে খুনের ছক কষা হয় বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশের দাবি, খুনের পরিকল্পনার পুরোটাই জানত ধৃতেরা। ঘটনার দিন ধর্মেন্দ্রর মোটরবাইকের পিছনে বসা ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, খুনের অভিযোগে ধৃত চন্দনই ধর্মেন্দ্রকে লক্ষ্য করে প্রথম গুলিটা চালিয়েছিল। সে দিন ঠিক কী ঘটেছিল এবং খুনিরা কোথা দিয়ে পালিয়েছিল, তা জানতে এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) মহম্মদ সানা আখতার এবং এসিপি মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা গোটা এলাকাটিও ঘুরে দেখেন।
তদন্তকারীরা জানান, চলন্ত বাইকে থাকা ধর্মেন্দ্রকে লক্ষ্য করে চালানো প্রথম গুলিটা লেগেছিল তাঁর ডান কানের ঠিক নীচে। এর পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে আরও পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তদন্তকারীদের বক্তব্য, চলন্ত বাইকে বসে থাকা কাউকে গুলি করে খুন করাটা খুবই কঠিন এবং বিপজ্জনক কাজ। ‘শার্প শুটার’ ছাড়া কারও পক্ষে ওই ভাবে খুন করা সম্ভব নয়। এই শুটারদের ধৃতেরা নিজেরাই ভাড়া করেছিল, না সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত কোনও প্রভাবশালীর নির্দেশে তাদের ভাড়া করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যাচাই করা হচ্ছে ঘটনার দিন ধর্মেন্দ্রর মোটরবাইকের পিছনে বসা সঙ্গীর বক্তব্যের সত্যতাও।