সেই হোর্ডিং। নিজস্ব চিত্র
মাইকনগরীতে উলটপুরাণ! সম্প্রতি এলাকার প্রবীণ নাগরিকদের কথা ভেবে শব্দদূষণ বন্ধে হোর্ডিং পড়েছে দমদম পুর এলাকার একটি ওয়ার্ডে। তাতে বলা হয়েছে, ইটলগাছা রোড সংলগ্ন ওই এলাকায় শব্দবাজি, আতসবাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ। বাজানো যাবে না ডিজে-ও। দমদম পুরসভার অন্তর্গত ছ’নম্বর ওয়ার্ডের ক্লাব প্রাঙ্গণে লাগানো এই হোর্ডিং এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, দমদমে মাইক বাজাতে কোনও কারণ লাগে না। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শব্দের তাণ্ডব দমদমে কার্যত নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলা, মেলা, উৎসবের ভারে এখন দমদমের পথঘাটে কান পাতাই দায়। সেখানে ক্লাব প্রাঙ্গণের হোর্ডিং নজর কাড়ছে পথচলতি মানুষের। হোর্ডিংয়ে লেখা রয়েছে, এলাকার প্রবীণদের সুস্থ রাখার জন্য অনুষ্ঠানবাড়ি চলাকালীন ক্লাব প্রাঙ্গণে কোনও শব্দবাজি, আতসবাজি জ্বালানো নিষিদ্ধ করা হল এবং ডিজে বাজানো যাবে না।
ওই ক্লাব প্রাঙ্গণের একটি বাড়ি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া হয়। ক্লাবের সম্পাদক সমীর ঘোষদস্তিদার জানান, অনুষ্ঠান চলাকালীন শব্দবাজি, আতসবাজির দাপটে প্রবীণদের অসুবিধা হত। গভীর রাত পর্যন্ত ডিজে-র দাপটে তাঁদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটত। সেই জন্য নতুন বছরে ক্লাব কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত। সমীরবাবুর কথায়, ‘‘বুকিং নেওয়ার সময়েই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতে আর্থিক ক্ষতি হলেও পরোয়া নেই। এলাকার প্রবীণদের স্বাস্থ্য সবার আগে।’’
দীর্ঘদিন দমদম এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের বক্তব্য, আত্মপ্রচারের তাগিদে মাইকে অ-মাইক থাকতেই সেখানকার সর্বস্তরের নেতারা স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। প্রতি সপ্তাহে মেলা-উৎসবের নামে বাতিস্তম্ভে চোঙার আওয়াজ শুনে দিন কাটানোই দমদমবাসীর ভবিতব্য। সেখানে একটি ক্লাব যে ভাবে উল্টো পথে হাঁটার চেষ্টা করেছে তার প্রশংসা করছেন স্থানীয়েরা। ওই ক্লাবের কাছেই বাড়ি ৮০ বছরের সুরেন হালদার এবং বছর পঁয়ষট্টির শঙ্কর মিশ্রের। স্বাস্থ্য ভবনের কর্মী সুশান্ত কর্মকারের বাড়িও খুব বেশি দূরে নয়। ক্লাবের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করে যা কেউ পারেননি বর্তমান ক্লাব কর্তৃপক্ষ তা করে দেখিয়েছেন।’’
ক্লাব সম্পাদক অবশ্য হোর্ডিং লাগিয়েই থামতে চাইছেন না। তিনি বলেন, ‘‘হোর্ডিংয়ের বক্তব্য যাতে সকলে মেনে চলেন সে জন্য নজরদারি চালাতে হবে। আমরা প্রস্তুত।’’