প্রচার: ভর্তি নিয়ে অভিভাবকদের সচেতন করতে পোস্টার।
কলেজে কলেজে ভর্তি শুরু হতেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা তমোঘ্ন ঘোষ তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস দিয়েছেন, ‘স্ট্রিক্টলি। নো অ্যাডমিশন রিলেটেড রিকোয়েস্ট প্লিজ।’
আশুতোষ কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নিয়ন্ত্রিত ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে ফ্লেক্স টাঙানো হয়েছে। তাতে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে অচেনা, অজানা মানুষের দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়ে সরাসরি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
যোগেশ চৌধুরী আইন কলেজে টিএমসিপি-র পক্ষ থেকে কলেজের বাইরে পোস্টার দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা, ‘এই কলেজের প্রাক্তন পড়ুয়া মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী। ছাত্র সংসদ ভর্তি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে না। অভিযোগ এলে সরাসরি রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন’।
কলেজে কলেজে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বেশ কিছু দিন ধরেই সরব। বিধানসভাতেও তিনি জানিয়েছেন, ভর্তি হবে অনলাইনে। কারও হস্তক্ষেপ থাকবে না। এর আগে মন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য করে কলেজে কলেজে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তির পিছনে ছাত্র সংসদের ভূমিকা আছে। এ সব ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনও যে হয়, তা-ও বলেছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, রাজ্যের সিংহভাগ কলেজের ছাত্র সংসদ এখন টিএমসিপি-র দখলে।
তমোঘ্ন বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর কথা মতো আমরাও চাই, ভর্তি হোক মেধার ভিত্তিতে, অনলাইনে। অনুরোধ রাখা সম্ভব নয়। মুখেও বলছি। হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাসেও লিখেছি।’’
অতীতে যে সব কলেজ অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি নিয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি তাদের তালিকা তৈরি করেছে। তাতে আশুতোষ কলেজের নাম ছিল। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পৌলমী সামন্ত জানালেন, শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশই কলেজে মেনে চলা হবে। তাই ভর্তির শুরুতেই ওই ফ্লেক্সটি লাগানো হয়েছে।
টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘ভর্তির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ছাত্র সংসদ হস্তক্ষেপ করবে না। কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে ছাত্র সংসদ সব রকম সহযোগিতা করবে।’’
শহরের এক কলেজের অধ্যক্ষের বক্তব্য, ভর্তির মরসুম শেষ না হলে কিছু বলা যায় না। শুধু ছাত্র সংসদের চাপ নয়, প্রভাবশালী নেতাদের থেকেও ভর্তি করানো নিয়ে বহু অনুরোধ আসে। শিক্ষামন্ত্রীর কড়া বার্তার পরে কী হয়, সেটাই এ বার দেখার। তাঁর মতে, ‘‘এ ক্ষেত্রে না আঁচালে বিশ্বাস নেই।’’
এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেন রায় বলেন, ‘‘জোর করে ছাত্র ভর্তি টিএমসিপি-ই করে। আসলে ওদের না-এর মধ্যেই হ্যাঁ লুকিয়ে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, শিক্ষকদের অবমাননা না করতে। তার পরেও ওরা শিক্ষকদের পেটায়।’’