আবার বিজেপি-কে নিশানা করলেন বাবুল সুপ্রিয়। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি-র বিদ্বেষ, ঘৃণা ও বিভাজনের রাজনীতিতে উত্যক্ত হয়ে তিনি দল ছেড়েছিলেন বলে দোলের দিন বিকেলে টুইট করে পুরনো দলকে আক্রমণ করলেন বাবুল সুপ্রিয়। বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী বাবুল এমন অভিযোগও তুলেছেন যে, তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছিল, তাঁর ভাল কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
বিজেপি ছেড়েছিলেন ২০২১ সালের ৩১ জুলাই। সেই সময়ে কেন দু’দুবার সাংসদ ও মন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি দলবদল করলেন তা খোলসা করেছিলেন বাবুল। এখন ভোটের লড়াইয়ে নামা বাবুল টেনে এনেছেন সেই সব পুরনো কথাই। শুক্রবার বিকেলে তিনি টুইটারে আক্রমণ করতে গিয়ে তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়ে যাওয়াকে বাঙালিকে হেয় করার সামিল বলেও দাবি করেছেন। রাজ্য বিজেপি-কে ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘ভাল কাজের স্বীকৃতি না দিয়ে বাঙালিকে হেয় করাও আমি মাথা নিচু করে মেনে নিইনি। শান্তি ও সংহতির জন্য কাজ করে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই বাংলার মূলমন্ত্র।’
শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনে বাবুলের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। সেই লেখাতেও তাঁর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার প্রসঙ্গ টেনেছেন নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী। টুইটে যে ভাষায় আক্রমণ রয়েছে তেমনটা না হলেও সেখানে ‘অভিমান’, ‘বিতৃষ্ণা’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’-র কথা উঠে আসে। বাবুল সেখানে লেখেন, ‘ হাফ-সেঞ্চুরি করা এ জীবনের খাতায় অনেক আঁকিবুঁকি আছে। স্বাভাবিক ভাবেই তার সঙ্গে নানা স্মৃতি জড়িয়ে। তাতে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনা, আঘাত যেমন আছে, তেমনই কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা, কিছু অভিমান, রাগ, উষ্মা, বিতৃষ্ণা, বিশ্বাসঘাতকতার স্মৃতিও আছে।’
বাবুল তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বিজেপি-তে থাকার সময়ের তাঁর কিছু বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে থাকে। রাজ্য বিজেপি-র পক্ষ থেকেও সেই সময়ে বাবুল কী ভাষায় তৃণমূলকে বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন তার ভিডিয়ো ভাইরাল করা হয়। এখন বালিগঞ্জে প্রার্থী হওয়ার পরে সে সব নতুন করে শুরু হয়েছে। শুক্রবারের লেখায় বাবুল অবশ্য জানিয়েছেন তিনি এ সবকে গুরুত্ব দিতে চান না। একই সঙ্গে জানিয়েছেন কী ভাবে বিজেপি-তে থেকেও গেরুয়া শিবিরের বিভাজনের রাজনীতি থেকে তিনি দূরে থেকেছেন। বাবুল লিখেছেন, ‘বিজেপি-তে থাকার সময় আমাকে দলের হিন্দুত্বের রাজনীতি, ভেদাভেদের মতাদর্শের সঙ্গে এক জন কর্মী হিসেবে মানিয়ে চলতে হত। নানা রকমের ভাষণ দিতে হত। তবে আমি কিন্তু নির্লজ্জ ভাবে আশি-বিশ বা সত্তর-তিরিশের রাজনীতি করিনি। মানুষের মধ্যে হিংসা ছড়িয়ে দেওয়ার নোংরা রাজনীতি কখনওই করিনি, এটা জোর গলায় বলতে পারি।’
এখন তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁর নীতি যে বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখা সেটাও টুইটে উল্লেখ করেছেন বাবুল। লিখেছেন, ‘বাংলার ঐতিহ্য,সংস্কৃতি এবং ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য যা যা করণীয় আমি করব। আসানসোলের মানুষও জানে ৭০:৩০, ৮০:২০-র জাতপাত, ধর্মীয় বিভাজনের সংকীর্ণমনস্ক রাজনীতি কখনও করিনি, করবও না।’