ফাইল চিত্র।
যে কোনও বিপর্যয় বা সঙ্কটে তারা কে কত বেশি করে মানুষের পাশে থাকে, তা নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা নতুন নয়। সাম্প্রতিকতম দুই বিপর্যয়, করোনা অতিমারি এবং ঘূর্ণিঝড় আমপানে মানুষের পাশে সব চেয়ে বেশি দাঁড়িয়েছিল কারা, পুরভোটের মুখে তা নিয়ে কার্যত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। যে প্রতিযোগিতায় ঢুকে পড়েছেন বামেদের রেড ভলান্টিয়ার্সরাও।
ঘটনাচক্রে, মোট ৪৩ জন রেড ভলান্টিয়ার্স এ বারের ভোটে লড়ছেন। তাঁরা মূলত সিপিএমের যুব ও ছাত্র সংগঠনের কর্মী। বাম নেতৃত্বের একাংশের দাবি, অতিমারির সময়ে এই কর্মীরা মানুষজনকে নানা ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়াই হোক বা কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করা। যা ওই কর্মীদের আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। যদিও শাসকদল তৃণমূল বা বিরোধী কংগ্রেস এবং বিজেপি মনে করছে, এই সাহায্য নিছক রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। তা ভোটের ময়দানে রেড ভলান্টিয়ার্সদের বাড়তি সুবিধা দেবে না।
যেমন, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী অন্বেষা দাস কাজ করেছেন রেড ভলান্টিয়ার হিসাবে। তিনি বলেন, ‘‘টাকা তোলার জন্য আমাদের বিশ্বাস করে এটিএম কার্ড দিয়েছেন করোনায় আক্রান্ত মানুষেরা। এ ছাড়া, বাড়ি বাড়ি ওষুধ অথবা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া তো ছিলই। বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল বলেই ওঁরা আমাদের ভরসা করেছেন।’’
শিয়ালদহ এলাকার ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী, রেড ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করা উপনীতা পাণ্ডে বলেন, ‘‘আমরা যখন অতিমারিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, তখন জানতাম না ভোটে লড়ব। ওই পরিস্থিতিতে বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করেছি।’’ একই কথা বলছেন গড়িয়া এলাকার ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী, আর এক রেড ভলান্টিয়ার তনুশ্রী মণ্ডল।
ওই ওয়ার্ডেই তনুশ্রীর প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপির নিতাই মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘শুধু করোনা নয়, আমাদের দলের কর্মীরা আমপানের সময়েও মানুষের পাশে ছিলেন। গরিব মানুষদের দু’বেলা খাওয়ানো, তাঁদের বাড়িতে চাল-ডাল পৌঁছে দেওয়া— সবই করেছি। কিন্তু তা নিয়ে বামেদের মতো বড়াই করিনি।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যও মনে করছেন, তাঁরা নীরবে মানুষের সেবা করেছেন। তৃণাঙ্কুর বলেন, ‘‘করোনাকালে আমাদের দলের কাজ আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছেছে। করোনা আক্রান্তেরা যাতে ঠিক মতো চিকিৎসা পরিষেবা পান, তার জন্য ডাক্তারদের হেল্পলাইন তৈরি করেছি। তাতে অনেকে উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু রেড ভলান্টিয়ার্সদের সাহায্য নিয়ে বামেরা যে ভাবে প্রচার করছেন, তা আদতে রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়।’’