টিনের শেড উড়ে এসে পড়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর লাইনের উপরে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ স্টেশনের কাছে। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপান রেহাই দেয়নি কলকাতা মেট্রোকেও। ঝড়ের দাপটে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর ক্ষতি তো হয়েছেই, বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে সদ্য যাত্রা শুরু করা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। মাটির উপরে থাকা মেট্রো স্টেশনগুলির কোনওটির ছাদ উড়ে গিয়েছে, কোথাও আবার ভেঙে গিয়েছে নতুন বসানো স্ক্রিন ডোর। এ ছাড়াও মেট্রোর উড়ালপথে বসানো বাতিস্তম্ভ ভেঙে ঝুলে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, ঝড়ের তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর স্টেশন এবং অন্য পরিকাঠামো। তুলনায় মাটির উপরে থাকা উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর স্টেশনগুলির ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কম। পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ছ’টি স্টেশনের নানা ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও সেন্ট্রাল পার্কে মেট্রোর ডিপোয় হামলার চিহ্ন রেখে গিয়েছে আমপান। পাঁচ নম্বর সেক্টর এবং করুণাময়ী স্টেশনে মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে বসানো স্ক্রিন ডোর ভেঙেছে। এক-একটি স্টেশনে দু’টি প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে মোট ৪৮টি স্ক্রিন ডোর থাকে। পাঁচ নম্বর সেক্টর এবং করুণাময়ী মিলিয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ছ’টি স্ক্রিন ডোর।
বিশেষত, প্ল্যাটফর্মের দু’প্রান্তে ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
ঝড়ের হামলায় মেট্রো-পথের উপরে থাকা বাতিস্তম্ভ ভেঙে ঝুলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে পাঁচ নম্বর সেক্টর এবং করুণাময়ীর মাঝখানে। ওই জায়গায় উড়ালপথের দু’ধারে থাকা রেলিংও ভেঙেছে। একাধিক জায়গায় মেট্রো স্টেশনের শেড উড়ে গিয়ে পড়েছে লাইনে। হাওয়ার ধাক্কায় উড়ে গিয়েছে মেট্রোর ডিপোয় কুলিং প্লান্টের শেডও। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর কুঁদঘাট সংলগ্ন নেতাজি এবং নাকতলা সংলগ্ন গীতাঞ্জলি স্টেশনের শেড উড়ে গিয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, সার্বিক ভাবে এই সব ক্ষয়ক্ষতি মেরামত না-হলে লকডাউনের পরে পরিষেবা শুরু করতে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
তবে নোয়াপাড়া এবং কবি সুভাষ স্টেশনের কারশেড ততটা ক্ষতিগ্রস্ত না-হওয়ায় আরও বড় বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন মেট্রোকর্তারা। ঝড় ঠেকাতে ওই দু’জায়গাতেই একাধিক খালি রেকের নীচে থাকা ঢাকায় বিশেষ ব্লক লাগানো হয়েছিল, যাতে ট্রেন গড়িয়ে না-যায়। যদিও তার পরেও শেডের অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির খতিয়ান জানতে আজ, মঙ্গলবার বিভাগীয় আধিকারিকদের নিয়ে মেট্রো ভবনে বৈঠক করবেন সংস্থার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই বিপর্যয়ের প্রকৃত অঙ্ক জানা যাবে বলে খবর।
আরও পড়ুন: সারা রাত ঘুম নেই, সকাল হলেই জলের লাইনে