Arrest

লোক লাগিয়ে খুন প্রৌঢ়কে, ধৃত এক মহিলা-সহ তিন

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, খুন হওয়া প্রৌঢ় ড্যানিয়েল মারিয়ানকে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তিনি ওই ফ্ল্যাট কিনে দেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩ ০৭:১৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

একবালপুরের প্রৌঢ়কে খুনের ঘটনায় শনিবার এক মহিলা-সহ মোট তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম কালু দাস, মহম্মদ তারিক ওরফে শাহবাজ এবং শেখ শর্বরী। তিন জনেরই বাড়ি বন্দর থানা এলাকায়। আরও এক অভিযুক্ত পলাতক। ধৃতদের আজ, রবিবার আদালতে তোলার কথা রয়েছে।

Advertisement

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, খুন হওয়া প্রৌঢ় ড্যানিয়েল মারিয়ানকে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তিনি ওই ফ্ল্যাট কিনে দেননি। অথচ টাকাও ফেরত দেননি। তার জেরেই পরিকল্পনা করে লোক লাগিয়ে তাঁকে খুন করে মূল অভিযুক্ত শর্বরী। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে খুনের পরেই অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল সে।

পুলিশ সূত্রের খবর, শর্বরীই ওই খুনের মূল মাথা। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল ড্যানিয়েলের। কিন্তু ফ্ল্যাট কেনার জন্য ড্যানিয়েলকে দেওয়া টাকা ফেরত না পেয়ে নিজের পিসতুতো ভাই শাহবাজকে খুনের দায়িত্ব দেয় সে। শাহবাজ আবার খুন করার জন্য কালু এবং আরও এক জনকে জোগাড় করে আনে। খুনের দিন, ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার পরে ড্যানিয়েলের ফ্ল্যাটে পৌঁছয় তারা। উল্লেখ্য, শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই পুলিশ শর্বরীকে গ্রেফতার করে বাকিদের খোঁজ পায়।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, একবালপুর থানা এলাকার এম বি জি লেনে নিজের ফ্ল্যাট থাকলেও একবালপুরে চার তলার একটি ফ্ল্যাটে একা ভাড়া থাকতেন ড্যানিয়েল। এম বি জি লেনের আবাসনের একতলায় থাকত শর্বরী। সেখানেই ড্যানিয়েলের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তার। বছর চারেক আগে শর্বরীর স্বামী মারা যান। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, একবালপুর লেনে ড্যানিয়েলের ফ্ল্যাটে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওই মহিলার। শর্বরীর দাবি, এম বি জি লেনের ওই আবাসনে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য সে ধাপে ধাপে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিল ড্যানিয়েলকে। কিন্তু অভিযোগ, তিনি সেই টাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেননি এবং টাকাও ফেরত দেননি। এর পরেই ড্যানিয়েলকে খুন করতে শাহবাজকে কাজে লাগানো হয়। শাহবাজ কালু এবং পলাতক অভিযুক্ত নবাবকে সঙ্গে নিয়ে খুনের রাতে ড্যানিয়েলের ফ্ল্যাটে যায়। সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল শর্বরী। পুলিশ জানিয়েছে, কালু ও নবাব ড্যানিয়েলের হাত-পা বেঁধে দেয়। এর পরে শর্বরী ও শাহবাজ তাঁর গলা টিপে খুন করে। এক তদন্তকারী জানান, জেরায় গলা টিপে খুনের বিষয়ে শর্বরী এবং শাহবাজ একে অপরের দিকে আঙুল তুলছে। তারা দু’জনই অনেক কিছু লুকোতে চাইছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পলাতক নবাবের খোঁজ মিললেই বাকি তথ্য জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।

লালবাজার জানিয়েছে, খুনের জন্য শর্বরীর থেকে কয়েকশো টাকা পেয়েছিল অভিযুক্তেরা। খুনের পরে টাকা নিয়ে বাকি অভিযুক্তেরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। আর অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয় শর্বরী। প্রথম থেকেই তাকে নিয়েপুলিশের সন্দেহ থাকলেও তাকে ঠিক মতো জেরা করা যাচ্ছিল না। এক পুলিশ অফিসার জানান, ফোনের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে, ড্যানিয়েলের ফ্ল্যাটে ওই মহিলার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। কিন্তু ৯ জুলাইয়ের পরে সে আর ওই ফ্ল্যাটে যায়নি। আবার ওই দিনই সে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অন্য দিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৯ জুলাইয়ের পর থেকে ড্যানিয়েলও আর ফোন ব্যবহার করেননি।পুলিশের দাবি, ওই তথ্য হাতে আসার পরেই শর্বরীর পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাতেই পুরো বিষয়টি তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট হয় এবং ওই খুনের রহস্যের কিনারা হয় বলে দাবি পুলিশের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement