ধৃতদের কাছ উদ্ধার হওয়া কোকেন, এমডিএম এবং এলএসডি। নিজস্ব চিত্র
মাদক পাচার করতে গিয়ে গ্রেফতার হল দুই পড়ুয়া-সহ তিন জন। রবিবার শেক্সপীয়র সরণি থানা এলাকার একটি ডিস্কোর সামনে থেকে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হল সঙ্কল্প সিংহ, আদিত্য মজুমদার ও অনুপম সিংহ।
সঙ্কল্প ভবানীপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, আদিত্য দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। অন্য দিকে, অনুপম ভবানীপুর কলেজেই পড়তেন। কিন্তু মাঝপথেই পড়া ছেড়ে দিয়ে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা শুরু করেন। এদের কাছ থেকে তিন গ্রাম কোকেন, এমডিএম এবং এলএসডি-র মতো মাদক পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, আগে নিজেরাই মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল তারা। পরে মাদকের টাকা জোগাড় করতে কলেজের বাকি ছাত্রদের সরবরাহ করা শুরু করে। পুলিশ এর দাবি, প্রায় এক বছর ধরে মাদকের করবার করছে এই তিন জন। দিল্লি থেকে এক ব্যক্তি ধৃতদের মাদক সরবরাহ করত। কলকাতায় এসে সেই মাদক অনুপম, সঙ্কল্প এবং আদিত্যর হাতে পৌঁছে দিত সেই ব্যক্তি। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মাদক সরবরাহকারী এখনও এই শহরেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মাদক সরবরাহকারীর খোঁজ চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিদেশি লগ্নির টোপ, কলকাতায় সক্রিয় ‘কর্পোরেট প্রতারণা চক্র’
ধৃত তিন জনকে এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের তিন দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
কয়েক মাস আগেই নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো অফিসাররা অভিযান চালিয়ে বিধাননগর এবং কলকাতার স্কুল-কলেজের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেন। তখনই সামনে আসে পড়ুয়াদের মধ্যে অবাধে চলছে মাদকের লেনদেন। প্রধাণত ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলোতেই এই ধরনের অবৈধ কারবার জাঁকিয়ে বসেছে। ইন্টারনেটে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে মাদকের কারবার চালাচ্ছিল ওই সমস্ত কলেজ পড়ুয়ারাও। চক্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এ বার এই চক্রে স্কুল পড়ুয়াদের জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসায় বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক বলে মনে করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কাজিপাড়া বিস্ফোরণে আটক ৩
গত জুনেই ভবানীপুর থেকে মুব্বাসির আন্নান নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, শহরের বেশ কিছু নাম করা ইংলিশ মিডিয়ামের পড়ুয়ারাই তার গ্রাহক। শুধু এ শহরই নয়, দার্জিলিঙেও মাদকের জাল বিস্তার করেছিল মুব্বাসির।