প্রতীকী ছবি।
তিলজলার বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমে ঢুকে ভাঙচুর এবং টাকা লুটের ঘটনায় হরিয়ানার মেওয়াট থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম মহম্মদ শাহিদ। বাড়ি মেওয়াটের ফিরোজপুরে। তার সঙ্গে জড়িত বাকিদের খোঁজ চলছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ধৃতের সঙ্গে এ রাজ্যেরও কোনও চক্রের যোগ মিলতে পারে।
গত ২০ নভেম্বর ভোর ৫টা-সাড়ে ৫টা নাগাদ তিলজলার সি এন রায় রোডের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএমে আগুন লাগার খবর আসে। খবর পেয়ে তিলজলা থানার পুলিশ ও দমকল ঘটনাস্থলে যায়। চলে আসেন ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরাও। আগুন নেভানোর পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানান, এটিএমের ক্যাশবাক্স কাটা রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা উধাও। আর তখনই গোয়েন্দারা দেখেন ওই এটিএমের সিসি ক্যামেরাও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বুঝতে দেরি হয়নি যে এটিএমে ঢুকে ক্যামেরা অকেজো করে তা লুট করতে গিয়েই আগুন লাগে।
তদন্তকারীরা জানান, গ্যাস কাটার দিয়ে ক্যাশবাক্স কাটতে গেলে আগুন লেগে যায়। আর তার পরেই টাকা নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। তদন্ত শুরু করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। আর সেই তদন্ত করতে গিয়েই তাঁরা জানান, এ রাজ্যের কোনও দল নয়, অন্য রাজ্য থেকে এসে এই কাজ করেছে দুষ্কৃতীরা। সেই মতো এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। মেলে একটি দামি এসইউভি-র সন্ধান। তদন্তকারী এক অফিসার জানাচ্ছেন, কলকাতা থেকে মথুরা পর্যন্ত সব টোলপ্লাজ়ার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়। পাশাপাশি এলাকায় বেসরকারি যে সব সিসি ক্যামেরা রয়েছে, সেগুলিও খতিয়ে দেখতে গিয়ে একটি দামি গাড়ির খোঁজ মেলে, যেটির সঙ্গে তিলজলার ঘটনার গাড়ির মিল ছিল।
একটি তদন্তকারী দল দিল্লি ও মেওয়াট পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে সেখানকার চক্রগুলি, যারা এ ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত, মূলত এমন কিছু গাড়ি ব্যবহার করে যার বর্তমানে কোনও নির্দিষ্ট মালিকের তথ্য নেই।
এ রকমই তথ্য হাতিয়ার করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে একটি সাদা এসইউভি গাড়ির তথ্য সামনে আসে। সেই গাড়ি গত ক`দিনে কারা ব্যবহার করেছিল, সেই তথ্য ঘাঁটতে গিয়েই মহম্মদ শাহিদের খোঁজ মেলে এবং তাকে মথুরা জংশন থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জেরা করে চক্রের বাকিদের খোঁজ চলছে। পুলিশ জানায়, প্রায় ৩৫টি টোল প্লাজ়া আর বেসরকারি মিলিয়ে ১০০টির উপরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ৫০০টি ছবি দেখে শাহিদকে ধরা হয়।
তবে শুধুমাত্র তিলজলা নয়, গত কয়েক মাসে কলকাতা সংলগ্ন হাওড়া, বিমানবন্দর এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকাতেও এটিএম ভেঙে লুটের চেষ্টা হয়। তার মধ্যে হাওড়াতেই তিনটি ঘটনা ঘটে। তবে দু’টি ঘটনায় টাকা নিতে পারলেও একটিতে লুট করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ভাবে অনুমান, এই চক্রটিই গত কয়েক মাসে ওই ঘটনা ঘটাচ্ছিল।