ফাইল চিত্র
ছ’বছর আগে তৈরি হয়েছিল বিধাননগর পুরসভা। কিন্তু ভূপৃষ্ঠের মিষ্টি জল পেত শুধুই সল্টলেক। বাকি গোটা রাজারহাট-গোপালপুর এবং নিউ টাউনের বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত এলাকা এখনও মাটির নীচের জলের উপরেই নির্ভরশীল। এ বার ভূপৃষ্ঠের জল পৌঁছতে চলেছে রাজারহাট এলাকাতেও।
রাজারহাটে ভূপৃষ্ঠের জল সরবরাহের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল কেএমডিএ। ওই কাজে সহায়তার ভার নিয়েছিল বিধাননগর পুরসভা। প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যদের দাবি, চলতি বছরের মধ্যেই রাজারহাট-গোপালপুরের পাঁচটি ওয়ার্ডে ভূপৃষ্ঠের জল সরবরাহ করার চেষ্টা চলছে। বিধাননগরের পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, ২২, ২৩, ২৪, ২৫ এবং ২৬— প্রথমে এই পাঁচটি ওয়ার্ডে ভূপৃষ্ঠের জল পৌঁছবে। আগামী দিনে ধীরে ধীরে অন্য ওয়ার্ডগুলিতেও তা সরবরাহ করা হবে। এর ফলে কেষ্টপুর এলাকায় ভূপৃষ্ঠের জলের চাহিদা মিটবে। বর্তমানে নিউ টাউনের লাগোয়া হওয়ায় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশে হিডকোর মাধ্যমে নিউ টাউন জল প্রকল্প থেকে ভূপৃষ্ঠের জল পৌঁছয়।
বৃহস্পতিবার বিধাননগরের পুর প্রশাসকমণ্ডলীর বৈঠকে রাজারহাটে মিষ্টি জল পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। ঠিক হয়েছে, ১ থেকে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ওই জল পাঠানোর জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজ যত দ্রুত সম্ভব শুরু করা হবে। আগামী দেড়-দু’বছরের মধ্যেই সমগ্র রাজারহাটে ভূপৃষ্ঠের জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। আধিকারিকেরা জানান, বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে পুরসভা কেএমডিএ-র কাছে পাঠাবে। তবে ওই কাজ পুরসভাও করতে পারে।
উল্লেখ্য, বাগুইআটি, কেষ্টপুর, তেঘরিয়া, চিনার পার্ক, রাজারহাট-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বিধাননগর পুরসভার অধীনে। দিন দিন সেখানে বসতি বাড়ছে। তৈরি হয়েছে বড় বড় আবাসন। বেশ কিছু আবাসন তৈরির কাজও চলছে। এ ছাড়া রয়েছে একাধিক স্কুল এবং হাসপাতাল। অথচ, এখনও পর্যন্ত সেখানে ভূপৃষ্ঠের জল না পৌঁছনোয় প্রতি দিন মাটির নীচ থেকে বিপুল পরিমাণ জল তুলতে হয়।
বিধাননগরের পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা সাত নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর দেবারজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভূগর্ভের জল তো এক দিন শেষ হয়ে যাবে। তার আগেই আমরা চাইছি বিকল্প জলের ব্যবস্থা করতে, যাতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে। রাজারহাট এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা ছিল ভূপৃষ্ঠের জলের।’’
২২ থেকে ২৬, এই পাঁচটি ওয়ার্ডে জলের জোগানের জন্য সল্টলেকের পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে জলাধার তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, কেএমডিএ জলাধারটি তৈরির পরে পুরসভাকে হস্তান্তর করলেই রাজারহাটের কেষ্টপুর এলাকায় জল সরবরাহ শুরু হবে।