Saraswati Puja

ওঁদের ইশারায় পূর্ণ হয় সরস্বতীর আরাধনা

পুজোর ফল কাটা থেকে শুরু করে প্রদীপের সলতে পাকানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন সংগঠনের মহিলা সদস্যেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০১:২৯
Share:

পশ্চিমবঙ্গ বধির সঙ্ঘের পুজোমণ্ডপ। ছবি: সুমন বল্লভ, নিজস্ব চিত্র

সবে শেষ হয়েছে সন্ধ্যারতি। প্রদীপের তাপ নেওয়ার জন্য ওঁরা একে অপরকে ডাকতে শুরু করলেন। কিন্তু তা চেঁচামেচি করে নয়, ইশারায়!

Advertisement

গত ৮৩ বছর ধরে এমন ভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করে বাণী বন্দনার আয়োজন করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ বধির সঙ্ঘ। কালীঘাটের সদানন্দ রোড ধরে তপন থিয়েটারের দিকে এগোলেই ফুটপাতে দেখা মিলবে সেই পুজোর।

সেখানে মাইক বাজার কোনও ব্যাপার নেই। বরং শহরের বিভিন্ন প্রান্ত ও জেলা থেকে আসা প্রায় ৩০০ সদস্য একসঙ্গে বসে ইশারায় মনের ভাব প্রকাশ করে মেতেছেন অনাবিল আনন্দে। উদ্যোক্তাদের কেউ কানে আংশিক শুনতে পান, কেউ আবার স্পষ্ট ভাবে পুরো কথা বলতে পারেন না। কিন্তু তাতে কোনও ভাবেই আটকায় না সরস্বতী পুজোর আয়োজন। রীতিমতো বিল ছাপিয়ে সদস্যদের পাশাপাশি পাড়ার কিছু শুভানুধ্যায়ীর থেকেও তোলা হয় চাঁদা। বুধবার অঞ্জলি দিয়ে সব সদস্য পাত পেড়ে খেয়েছেন পোলাও, আলুরদম, চাটনি, মিষ্টি।

Advertisement

পুজোর ফল কাটা থেকে শুরু করে প্রদীপের সলতে পাকানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন সংগঠনের মহিলা সদস্যেরা। পুজোর সম্পাদক প্রবীর দে সরকার বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিসর্জন দেব না। শুক্রবার কয়েক জন মিলে বাবুঘাটে গিয়ে বিসর্জন দেব।’’ কিন্তু পুরোহিত যখন মন্ত্রোচ্চারণ করেন, তা শুনে বলতে তাঁদের অসুবিধা হয় না? সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান রঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘পুরোহিত আস্তে আস্তে বলেন। আমরাও তা শুনে ঠোঁট মেলাই।’’

এ দিন যখন মণ্ডপের সামনে ফুটপাতে আড্ডায় মশগুল প্রবীরবাবুরা, তখন সেখানে হাজির এক বিদেশি দম্পতি। অস্ট্রিয়ার বাসিন্দা এলিজাবেথ ও পল ৩৭ দিনের ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন। গত শনিবার এসেছেন কলকাতায়। সরস্বতী পুজোর সন্ধ্যায় স্থানীয় এক গাইডকে নিয়ে তাঁরা বেরিয়েছিলেন হেঁটে শহর ঘুরতে। এলিজাবেথ বলেন, ‘‘গাইডের থেকে শুনে অবাক হলাম। ওঁরা ঠিক মতো শুনতে পান না, কথাও পুরো বলতে পারেন না। তার পরেও পুজোর আয়োজন করে এত আনন্দ করছেন। এটা খুবই প্রশংসার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement