রঙিন: এ ভাবেই সেজে উঠেছিল ‘কলকাতা আর্টস লেন ফেস্টিভ্যাল’। রবিবার, হিন্দুস্থান পার্কে। ছবি: সুমন বল্লভ
ইট-কাঠ-পাথরের মাঝে টুকরো রাস্তা। সাজানো রঙিন গেট। দু’ধারে সেজে ওঠা বাড়িগুলির গায়েও শিল্পীর টান। সামনের ছোট ছোট স্টলে রকমারি জিনিস। সে সবের মাঝে চলছিল প্রদর্শনী। বন্ধ একটি হলুদ কাঠের দরজার পাল্লায় কাগজের টুকরো নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কোনও তরুণী। পথচারীদের দিকে তিনি এগিয়ে দিচ্ছেন টুকরো কাগজ আর পেন। তাঁর আবেদন, ‘‘লিখে দিয়ে যান আপনার মনের দু’-একটি কথা!’’ আর তা লিখে হলুদ দরজায় সাঁটানোর পরে কলম ফেরত দিতে গেলে তরুণীর উত্তর ‘‘ওটা আপনার জন্য।’’
রবিবার গড়িয়াহাটের হিন্দুস্থান পার্কের একটি অংশ এক দিনের জন্য এ ভাবেই সেজে উঠেছিল। উপলক্ষ, ‘কলকাতা আর্টস লেন ফেস্টিভ্যাল’। উৎসবের এটি তৃতীয় বছর। পরপর বাড়ির মাঝে রঙিন রাস্তা। তার পাশের স্টলে ছিল হ্যান্ডমেড পেপার আর কলমকারি মোড়কের
নোটবই, ক্যালেন্ডার, পেন্টিং। কোনও স্টলে কয়েক জন তরুণী কাচের বোতলে ভরে দিচ্ছিলেন পছন্দ মতো ঝিনুক, উলের বল, রঙিন পালক বা অভ্র। বোতল ভরে মুখ আটকে সে সব তাঁরা ধরিয়ে দিচ্ছিলেন ক্রেতার হাতে। এমনই একটি রঙিন বোতল নিয়ে ঘরে ফেরার পথে এক খুদেকে দিদির সঙ্গে কাড়াকাড়ি করতেও দেখা গেল।
যাদবপুর থেকে অভিলাষা বসু এসেছিলেন বন্ধুদের নিয়ে। অন্য রকম প্রদর্শনী থেকে কিনে নিয়ে গেলেন কিছু নকল গয়না এবং কলকাতার উপরে পেন্সিলের আঁকা ছবি। এক কোণে রাখা কিছু নতুন-পুরনো বইয়ের সম্ভারও ছিল। বইপোকাদের ভিড় জমছিল সেখানে। উৎসবের এক আয়োজক দেবাংশী রুংতা জানালেন, তাঁদের আর্ট স্টুডিয়োর সদস্য এবং পড়শিদের নিয়ে শুরু করেছেন এই উৎসব।
উৎসবের আরও একটি পর্ব ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মঞ্চ বেঁধে সকাল থেকে গান, মূকাভিনয়, ছৌ এবং নাটক মঞ্চস্থ হয়। শিশু, তরুণ-তরুণী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা— ছুটির সকালে অংশগ্রহণে সকলের আগ্রহ ছিল দেখার মতো। তা থেকে বাদ যাননি বিদেশিরাও।