পেশামুখী পাঠ্যক্রম চালুর ভাবনা

প্রসঙ্গত কম্পিউটার সায়েন্স, মনোবিদ্যা, কমিউনিকেশন ডিজাইন, আতিথেয়তা ও পর্যটন, ম্যানেজমেন্ট এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার মতো এই ছ’টি বিভাগে নতুন পাঠ্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৫
Share:

শুধু পঠন পাঠনই নয়, পাশাপাশি চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে এ বার পেশামুখী পাঠ্যক্রম তৈরিতে উদ্যোগী হল মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট)। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের জুন মাস থেকে শতাধিক কলেজে প্রায় ১৮টি পেশামুখী নতুন পাঠ্যক্রম চালু করতে চলেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি গোটা দেশে চাকরির মন্দা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র।

Advertisement

প্রসঙ্গত কম্পিউটার সায়েন্স, মনোবিদ্যা, কমিউনিকেশন ডিজাইন, আতিথেয়তা ও পর্যটন, ম্যানেজমেন্ট এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার মতো এই ছ’টি বিভাগে নতুন পাঠ্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের অধীনে চার থেকে পাঁচ রকমের বিষয় রয়েছে। সেই সমস্ত বিষয়ে কোর্স করতে পারলে চাকরির ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে বলে জানান উপাচার্য।

কিন্তু কীসের ভিত্তিতে এই সমস্ত বিষয়কে বেছে নেওয়া হল? বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন বেসরকারি কলেজ, বেসরকারি নানা সংস্থা যারা সরকারি ও বেসরকারি উভয় জায়গায় কর্মী সরবরাহ করে তাঁদের এবং বিশেষজ্ঞদের থেকে মতামত চাওয়া হয়েছিল। তাঁদের মতামত নিয়েই পাঠ্যক্রমগুলি চালু করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ও সমীক্ষা করেছে। সেখানে যে সমস্ত প্রস্তাব উঠে এসেছে তার ভিত্তিতেই এই নতুন পাঠ্যক্রমের তালিকা স্থির করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক কর্তা।

Advertisement

বর্তমানে শিক্ষা থেকে শুরু করে সর্বত্রই ডিজিটাল মাধ্যমের প্রভাব বা়ড়ছে। স্কুলে স্মার্ট ক্লাসরুম থেকে কলেজের ভার্চুয়াল ক্লাস। সেই সব জায়গায় দক্ষ লোকের এখনও অভাব। তাই প্রথমেই ভিস্যুয়াল কমিউনিকেশন ও ডিজিটাল ফিল্মসকে তালিকায় রাখা হয়েছে বলে খবর।

রাজ্য সরকার পর্যটন ব্যবস্থা ভাল ভাবে গড়ে তোলার জন্যে সচেষ্ট হওয়ায় গড়ে উঠেছে একের পর এক হোটেল ও রেস্তোরাঁ। সেখানেও পেশাগত ভাবে দক্ষ কর্মীর
প্রয়োজন হয়। ‘‘এ রকম জায়গায় কর্মীর জোগান দেবে আমাদের কলেজগুলিই’’— বললেন সৈকতবাবু। একই ভাবে আচরণে বিজ্ঞানের প্রভাব, মানসিক রোগের চিকিৎসা-সহ একাধিক নতুন বিষয় রাখা হয়েছে। স্কুল থেকে কলেজ, কচিকাচা থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সর্বত্রই কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রয়োগ করে সাধারণ আচরণ দিয়ে কী ভাবে কোনও মানুষের মনের রোগ সারানো যায় সে সবও শেখানো হবে ওই পাঠ্যক্রমে।

এ ছাড়া মেডিক্যাল ল্যাব টেকনোলজি, ফ্যাশন ম্যানেজমেন্টের মতো উল্লেখযোগ্যও বিষয়ও রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কলেজগুলি যাতে পড়ুয়াদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা করে সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রফেশনাল কোর্স করানো হয় রাজ্যে এ রকম মোট ১১০টি কলেজ রয়েছে। সেগুলিতে এই সব পাঠ্যক্রমের প্রয়োজনীয় উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে কলেজগুলিতে পরিদর্শনে যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। তার পরেই কোন কলেজে কোন পাঠ্যক্রম রাখা হবে সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সৈকতবাবু বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা পড়াশোনা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে চাকরি পেয়ে যান সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি এর ফলে সকলেই উপকৃত হবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement