ক্যানসার চিকিৎসা ব্যবস্থার ভিত শক্ত করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতীকী ছবি।
জেলা স্তরেও ক্যানসার চিকিৎসা ব্যবস্থার ভিত শক্ত করতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই লক্ষ্যেই এ বার প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ক্যানসার ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। সেই কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী ও সচল করতে বেশ কয়েকটি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি তথা প্রশিক্ষণ শিবির করবে স্বাস্থ্য দফতর।
শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবনের জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, চিকিৎসকদের পাশাপাশি হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ, সুপার এবং সহকারী সুপারদেরও (নন-মেডিক্যাল) সচেতনতা বাড়ানো ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী ২৪ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও ১৪টি জেলা হাসপাতালে চলবে এই কর্মসূচি। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে সমস্ত জেলা হাসপাতালেও এই রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। কোন ধরনের ক্যানসারে কত জন আক্রান্ত, তা নজরে রাখতে একটি নির্দিষ্ট পোর্টালও চালু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই পোর্টালে জেলা স্তরের হাসপাতালগুলিকেও তথ্য নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে। আগামী দিনে মহকুমা ও ব্লক স্তরেও সেই কাজ শুরু করা হবে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে ‘স্পোক অ্যান্ড হাব’ মডেলে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা স্তরে সেই কাজকে আরও ত্বরান্বিত করতেই এই প্রশিক্ষণের আয়োজন। যেখানে ১৯ দিনের মধ্যে প্রতিটি দিনকে ভাগ করা হয়েছে এক-একটি বিশেষজ্ঞ বিভাগ, উপাধ্যক্ষ, সুপার ও সহকারী সুপারদের জন্য। জানা যাচ্ছে, রেডিয়োথেরাপি, মেডিসিন, শল্য, স্ত্রী-রোগ, প্যাথলজি, কান-নাক-গলা, রেডিয়োডায়াগনস্টিক ও দন্ত বিভাগের বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ হবে।
ক্যানসার চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসকেরা জানান, ওই সমস্ত বিভাগে আসা রোগীদের দেখে যাতে ক্যানসারের বিষয়টি বোঝা যায়, তার জন্যই মূলত প্রশিক্ষণ। এতে জেলা স্তরের হাসপাতালেই রোগটি চিহ্নিত করা যাবে। দ্রুত চিকিৎসাও শুরু হবে। এসএসকেএমের স্তন ক্যানসারের শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, “সচেতনতা বৃদ্ধি, রোগ নির্ধারণ ও চিকিৎসা, এই তিন বিষয়ে বিলম্ব কমিয়ে আনলেই ক্যানসার অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এই পদক্ষেপে তা করা যাবে মনে হয়। কর্মসূচিটি সাফল্য পেলে আগামী দিনে এটি মডেল হবে।” রাজ্যের প্যারামেডিক ওমেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, “চিকিৎসার ব্যবস্থায় যুক্ত সকলকেই যৌথ ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাতে গোড়াতেই রোগ নির্ণয় সম্ভব।”