এমএলএ হস্টেলের মতো নিরাপত্তার নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ একটি আবাসনের গেটের ভিতরে ঢুকে সুপারকে মারধর ও তার ঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল কয়েক জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। শুক্রবারের এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ৭ জন। কিড স্ট্রিটে ওই হস্টেল চত্বরেই রয়েছে একটি পুলিশ পিকেট। সেখানে মোতায়েন পুলিশের সশস্ত্র দুই রক্ষী। তা সত্ত্বেও এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে এমএলএ হস্টেলের নিরাপত্তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ হস্টেলের ভিতর থেকে মোটরবাইকে বেরোচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। প্রধান গেট থেকে বেরোনো মাত্রই জওহরলাল নেহরু রোডমুখী আর একটি মোটরবাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁর। এ নিয়ে দু’জনের বচসা ও পরে হাতাহাতি হয় বলে অভিযোগ। আশপাশের লোক জন এসে বিষয়টি তখনকার মতো মিটমাট করান।
স্থানীয়দের দাবি, এর পরে হস্টেল থেকে বেরোনো বাইক-আরোহীকে আর দেখা যায়নি। বাইরে থাকা অন্য আরোহীকে মোবাইলে কথা বলতে দেখা যায়। অল্প পরেই হস্টেলের বাইরে এসে পৌঁছয় ৭-৮ জন যুবকের একটি দল। তারা হস্টেলে ঢোকার জন্য গেটের বাইরে থাকা পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীদের হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, এক সময়ে হস্টেলের গেট খুলে দেওয়া হয়। ভিতরে ঢুকেই তারা এক তলায় হস্টেলের সুপার প্রদীপ চক্রবর্তীর ঘরে ঢুকে বাইক-আরোহী ওই ব্যক্তির খোঁজ করে। এমনকী, তাঁকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিও জানায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুপার কথা না শোনায় ওই যুবকেরা তাঁকে মারধর করে এবং তাঁর ঘরে ভাঙচুর শুরু করে। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যাচ্ছে দেখে মূল গেটের রক্ষীরা গেটটি ভিতর থেকে বন্ধ করে খবর দেন পার্ক স্ট্রিট থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছন ওসি, সঙ্গে বাহিনী।
কিন্তু হস্টেলের ভিতরে থাকা পুলিশের সশস্ত্র রক্ষীরা ব্যবস্থা নিলেন না কেন? পুলিশের দাবি, হস্টেল-কর্তৃপক্ষ নির্দেশ না দিলে তাঁদের কিছু করার অধিকার নেই। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও নির্দেশ মেলেনি। তাই তাঁরা গেট বন্ধ করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনাস্থলে যান বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরাপত্তার গাফিলতি মানতে চাননি তিনি। বিমানবাবু বলেন, ‘‘বিধায়কদের গাড়ি ঢুকলে বড় গেট খোলা হয়। সেই ফাঁকেই কোনও ভাবে ওই যুবকেরাও ঢুকে পড়ে। পুলিশ দ্রুত গিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে কয়েক জন। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।’’
লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকেই সাত জনকে ধরা হয়।’’ তবে কী ভাবে নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে তারা এমএলএ হস্টেলে ঢুকল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।