প্রতীকী ছবি।
পঞ্চসায়রের যুবক বিশ্বরূপ দাসকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুব্রত কামাথকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ধৃত সুভাষ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। জাল নোট পাচারের অভিযোগে সিআইডির দায়ের করা মামলা-সহ তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক খুনের মামলাও।
পঞ্চসায়র থানা এলাকায় গত ১৬ মার্চ রাতে বাড়ির সামনেই খুন হন বছর ২৫-এর যুবক, পেশায় প্রোমোটার বিশ্বরূপ দাস। পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের পরে তাঁর বাবা দেবু দাস ছেলের কয়েক জন পরিচিতের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ আনেন। তিনি অভিযোগে জানান, ছেলে প্রোমোটার হিসেবে কাজ করতেন। আগে এলাকারই বাসিন্দা তারক পাত্র ওরফে প্রেমের সঙ্গে কাজ করতেন বিশ্বরূপ। কিন্তু পরে তারকের দল থেকে বেরিয়ে এসে নিজে কাজ শুরু করেন তিনি। সেই আক্রোশেই তারক, সন্তোষ কীর্তনিয়া ওরফে ঢোলু, প্রদীপ ধর, সুব্রত কামাথ-সহ কয়েক জন মিলে ছেলেকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন দেবুবাবু। তদন্তে নেমে লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা প্রদীপ ধর ও জয়ন্ত চক্রবর্তী নামে দু’জনকে পরের দিনই ধরেন। এর পরে বাকিদের গ্রেফতার করা গেলেও সুব্রত পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। ফলে ১২ জুন আদালতে চার্জশিট দেওয়ার সময়েও সুব্রতকে ‘ফেরার’ বলে দেখানো হয়।
সম্প্রতি সুব্রতও কলকাতা পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায়। সে জেরায় জানায়, খুনের পর থেকে সে খড়দহে সুভাষ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির আশ্রয়ে ছিল। খোদ অভিযুক্তের কাছ থেকে এই বয়ান পেয়ে তার সত্যতা যাচাই করতে নামে পুলিশ। প্রমাণ পেতেই শুক্রবার গভীর রাতে সুভাষের খড়দহের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ধরা হয় তাকে।
এ দিকে স্থানীয় পুলিশের একাংশের দাবি, সুভাষ নিজেকে প্রোমোটার বলে প্রচার করলেও সে আসলে তোলাবাজিতে জড়িত। একাধিক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে তার। এর মধ্যে রয়েছে ২০১২ সালে বরাহনগরের প্রোমোটার তথা এক সময়ের দুষ্কৃতী অপু দে-র খুন। ঘোলায় হরি ঘোষের খুনের পাশাপাশি তারাপীঠের একটি খুনের ঘটনাতেও সুভাষের নাম জড়ায়। যদিও তারাপীঠের খুনের ঘটনায় সুভাষ প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় বলেই উত্তর ২৪
পরগনা জেলা পুলিশের একটি সূত্রের খবর। তবে বাকি খুনের মামলাগুলিতে এখনও সুভাষের নাম রয়েছে। এর পাশাপাশি, জাল নোট পাচারের ঘটনাতেও সিআইডি-র একটি মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। তবে খড়দহ থানা জানিয়েছে, তাদের এলাকায় সুভাষের বিরুদ্ধে খুনের কোনও মামলার কথা জানা নেই। মাদক আইনে একটিই অভিযোগ ছিল সুভাষের বিরুদ্ধে।
লালবাজার সূত্রের খবর, সুব্রতকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে তারা সুভাষকে গ্রেফতার করেছে। এর আগে কোনও অপরাধের সঙ্গে তার যোগ থাকলেও কলকাতা পুলিশের এলাকায় কোনও তথ্য নেই।