আদালতের নজরদারি ট্রাম পরিষেবায়। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা শহরের ঐতিহ্যবাহী ট্রাম তুলে দিতে চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল সরকারের তরফে। পাল্টা আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে আবার নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। গত শুক্রবার পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে সুস্পষ্ট নীতি তৈরি করে ফেলবে রাজ্য। নতুন বছরের প্রথম মাসেই সেই নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট জমা প়ড়বে কলকাতা হাই কোর্টে।
সম্প্রতি শহরে ট্রাম চলাচল বন্ধের আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য জানায়, কলকাতা পুলিশ ট্রাম চালানোর বিরোধিতা করেছে। কারণ, ট্রামের ধীর গতির জন্য ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সমস্যার মুখে পড়ে। রাজ্যের এই ব্যাখ্যায় একমত হয়নি হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম জানান, পুলিশ একা ট্রাম চালানোর বিরোধিতা করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, ‘‘ট্রাম রাজ্যের ঐতিহ্য। তাকে রক্ষা করতে হবে। অহেতুক তর্কবিতর্ক না করে গঠনমূলক আলোচনা প্রয়োজন।’’
তারপরেই গত শুক্রবার পরিবহণ দফতর, কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ একযোগে বৈঠকে বসে নির্দিষ্ট ট্রাম নীতি তৈরি করে আদালতে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ওই ট্রাম নীতিতে সুস্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হবে, কলকাতা শহরের কোথায় এবং কোন পথে ট্রাম চালানো সম্ভব। বর্তমানে টালিগঞ্জ থেকে বালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট থেকে ধর্মতলা ও শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলার মধ্যে ট্রাম চলাচল করছে। কলকাতার আরও একটি ঐতিহ্যবাহী রুট, ধর্মতলা থেকে খিদিরপুরের মধ্যে ট্রাম চালানোর চেষ্টা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর কাজের জন্য এই রুটে এখন ট্রাম চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ওই রুটে মেট্রো রেলের সমীক্ষার কাজ চালানো হচ্ছে। যদি ধর্মতলা-খিদিরপুর রুটের মধ্যে মেট্রোর কাজকর্ম শুরু হয়, তা হলে এই রুটে ট্রাম চালানো স্থগিত রাখা হবে। যদি মেট্রো ওই রুটে কোনও রকম নির্মাণকার্য না করে, তা হলে দ্রুতই ধর্মতলা থেকে খিদিরপুরের মধ্যে ট্রাম চালানো সম্ভব হবে বলে জানাচ্ছে পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র।