প্রতীকী চিত্র।
মেয়াদ শেষে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে বিধাননগর পুরসভা পরিচালনা করবে প্রশাসকমণ্ডলী।বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, বুধবার রাজ্য সরকার এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীকেই প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন করা হয়েছে। প্রশাসকমণ্ডলীতে সদস্য হিসেবে সাত জন থাকছেন। এই বোর্ডে থাকছেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়-সহ পুরনো বোর্ডের অন্য মেয়র পারিষেদরা। উল্লেখ্য, বুধবারই পুর বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ দিন রাতে কৃষ্ণাও বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে এত দিন পরিষেবা দেওয়া হচ্ছিল, নতুন ব্যবস্থায় সে ভাবেই কাজ হবে।’’২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবরে তৎকালীন বিধাননগর পুরসভা এবং রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল বর্তমান বিধাননগর পুরসভা (কর্পোরেশন)। আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই প্রশাসকমণ্ডলীর অধীনে পুরসভার কাজকর্ম শুরু হবে।
বাসিন্দাদের দাবি, পুরনো বোর্ডের আমলে বেশ কিছু প্রকল্প হয়েছে। কাজের গতিও কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো সব কাজ হয়নি। পুরসভার দাবি, পাঁচ বছরের মেয়াদকালে পানীয় জল সরবরাহ, নিকাশি, জঞ্জাল সাফাইয়ের উন্নত পরিকাঠামো গঠন-সহ একাধিক প্রকল্পের কাজ হয়েছে। যদিও রাজারহাট-গোপালপুরের বাসিন্দাদের একাংশ উন্নয়নের বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন। সল্টলেকের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রাস্তা, আলো-সহ কয়েকটি পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রত্যাশা মতো কাজ হয়নি। ওই দুই ক্ষেত্রে পরিষেবা আরও উন্নত করতে হবে। শহর হোর্ডিংয়ে, হকারে ভরেছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। পাশাপাশি বাসিন্দাদের আবেদন, নির্বাচনে যেন তাঁদের ভোট দেওয়ার অধিকার সুরক্ষিত থাকে। গত পুর নির্বাচনে অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন
ভোট দিতে পারেননি। শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোটের দিন গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়ে।উন্নয়নের প্রসঙ্গে বর্তমান বোর্ডের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘বিধাননগরের উন্নয়ন নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম তা এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পুর এলাকায় ঘুরলে বোঝা যাবে উন্নয়নের প্রকৃত অবস্থা।’’ অভিযোগ খারিজ করে বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি উন্নয়ন না হয়ে থাকে, তা হলে প্রাক্তন মেয়র হিসেবে তিনি দায় এড়াতে পারেন না। অভিযোগ ঠিক নয়।’’কংগ্রেস নেতা সোমেশ্বর বাগুই বলেন, ‘‘এ বার মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। গত পাঁচ বছরে পরিষেবার হাল খারাপ হয়েছে। এমনকি স্থায়ী মেয়র পর্যন্ত দিতে পারেনি শাসকদল।’’ সিপিএম নেতা পলাশ দাস বলেন, ‘‘মানুষের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্যই এই ব্যবস্থা। এতে দুর্নীতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
বিজেপি নেতা প্রভাকর মণ্ডল বলেন, ‘‘নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে বিধাননগরে পুরসভা গঠন করেছিল তৃণমূল। এখন নির্বাচনে যেতে ভয় পাচ্ছে। কোনও উন্নতি হয়নি। মানুষের দৈনন্দিন পরিষেবার হাল বেহাল। আমরা নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’’তৃণমূল নেতৃত্ব জানান, নির্বাচনে তাঁরা ভয় পান না। নির্বাচনের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সকলের বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে শাসক দলের একাংশের কথায়, দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের জল জমার সমস্যা, পরিস্রুত পানীয় জলের অভাবের মতো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাকে মেটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিষেবার মান আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।