রাজ্যে কেমন চলছে স্কুল, জানতে চায় কেন্দ্র। প্রতীকী চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের স্কুল শিক্ষা কেমন চলছে! জানতে চায় কেন্দ্র সরকার। সম্প্রতি সেই বিষয়গুলি ভাল করে জানতে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি কর্মসূচিতে ১৭১টি প্রশ্ন পাঠানো হয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতরে। বিষয়টির পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা অডিট। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ পাওয়ার পরেই এই বিষয়ে ৫ মে জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে শিক্ষা দফতর। নির্দেশিকা পাঠানোর পাশাপাশি পাঠানো হয়েছে ওই ১৭১টি প্রশ্নও। আগামী ২১ মে তারিখের মধ্যে এই প্রশ্নমালার উত্তরগুলি জানতে চায় শিক্ষা দফতর। মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী গত ২ মে থেকে রাজ্য সরকারের অধীন সর্বস্তরের স্কুলের গরমের ছুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই স্কুল প্রশাসনে ছুটির আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নতুন করে নির্দেশিকা পৌঁছতেই আবারও প্রশাসনিক কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে।
কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অফ চিল্ড্রেন ইন স্কুলসের অধীনে ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস কর্মসূচির অধীনে এই বিষয়টি শুরু করা হয়েছে গোটা দেশে। সেই ভাবেই পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের আওতায় এই কর্মসূচি করতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। স্কুল প্রশাসনের কাজকর্ম থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে কী কী বন্দোবস্ত করা হয়েছে তার বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়েছে। স্কুলের বাইরে নেশা জাতীয় দ্রব্যের কোনও বিক্রয় কেন্দ্র আছে কি না, তাও জানাতে বলা হয়েছে নতুন এই কর্মসূচিতে। বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের জন্য খেলার মাঠ রয়েছে কি না, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কেমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে কিংবা স্কুলে কোনও দুর্যোগের ঘটনা ঘটলে দ্রুত ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল থেকে বের করার কী পদ্ধতি রয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে এই প্রশ্নমালায়।
শিক্ষা দফতর থেকে প্রত্যেকটি জেলার শিক্ষা আধিকারিককে এই কর্মসূচি পালনের জন্য প্রত্যেকটি স্কুলের কাছে নির্দেশ পাঠাতে বলা হয়েছে। কর্মসূচিটি সমগ্র শিক্ষা মিশনের আওতায় হলেও প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির কাছেও এই প্রশ্নমালা পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘যে সব মাপকাঠিতে স্কুলগুলিতে সেফটি অডিট করার কথা বলা হয়েছে সে সব বিষয়গুলি যদি তলিয়ে দেখা যায় তা হলে আমাদের রাজ্যের বেশ ভাল অংশের স্কুলই ডাহা ফেল করবে। আমাদের রাজ্যে গত ১০ বছরে সেই অর্থে বিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়নি। যা হয়েছে তা কসমেটিক উন্নয়ন।’’ পাল্টা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘আমাদের কাছে যেমন নির্দেশ এসেছিল কর্মসূচিটি সে ভাবেই পালন করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সব প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে। আশা করব আমাদের রাজ্যের স্কুলগুলি ১৭১টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে।’’