Land Owners

সল্টলেক এবং কল্যাণীতে জমির চরিত্র পাল্টে বাসিন্দাদের মালিকানা, নতুন উদ্যোগ রাজ্যের

বর্তমানে সল্টলেকে সব জমির মালিকই নগরোন্নয়ন দফতর। কেউ বাড়ি কিনতে চাইলে তাঁকে নগরোন্নয়ন দফতরে কাঠাপ্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা ফি দিয়ে কিনতে হয়। কিন্তু জমির উপরে সম্পূর্ণ অধিকার থাকে দফতরের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫০
Share:

বিধানসভায় এই নতুন বিল পাশ হলে সল্টলেক এবং কল্যাণীর বাসিন্দারা সম্পূর্ণ রূপে তাঁদের জমির মালিকানা পাবেন। প্রতীকী ছবি।

রাজ্যের অনেকগুলি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির মতো সল্টলেক ও কল্যাণীতেও জমির ৯৯৯ বছরের লিজ়ের নিয়ম খারিজ করে দিতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য সরকার। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই বিল আসতে পারে বলে নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর। বিধানসভায় ওই বিল পাশ হলে সল্টলেক এবং কল্যাণীর বাসিন্দারা সম্পূর্ণ রূপে তাঁদের জমির মালিকানা পাবেন। যার অর্থ, বাড়ি বিক্রি কিংবা কেনার জন্য তাঁদের আর নগরোন্নয়ন দফতরের অনুমতির প্রয়োজন হবে না। দফতরকে এককালীন নির্দিষ্ট টাকা দিয়ে জমির মালিকানা নিজেদের নামে করে নিতে পারবেন তাঁরা।

Advertisement

বর্তমানে সল্টলেকে সব জমির মালিকই নগরোন্নয়ন দফতর। কেউ বাড়ি কিনতে চাইলে তাঁকে নগরোন্নয়ন দফতরে কাঠাপ্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা ফি দিয়ে কিনতে হয়। কিন্তু জমির উপরে সম্পূর্ণ অধিকার থাকে নগরোন্নয়ন দফতরের। এর ফলে সল্টলেকের বাসিন্দা কেউ নিজের বাড়ি অন্য ভাবে ব্যবহার করতে চাইলে দফতরের অনুমতি নিতে হয়। বার বার যোগাযোগ করতে হয় দফতরে।

সেই কারণেই এ বার সল্টলেকের জমির চরিত্র বদল করায় উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। এক আধিকারিক জানান, এককালীন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে দিলে বাড়ির মালিক সব সরকারি বিধিনিষেধ থেকে মুক্ত হতে পারবেন। পাশাপাশি, সরকারের কোষাগারেও টাকা আসবে।

Advertisement

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে সল্টলেক তথা বিধাননগর এবং কল্যাণী গড়ে উঠেছিল। কথিত আছে, সল্টলেকে বাঙালিকে বেঁধে রাখতে সেখানকার জমির ক্ষেত্রে ৯৯৯ বছরের লিজ়ের নিয়ম করে দেওয়া হয়। যাতে বাঙালিরা বাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যেতে না পারেন। এবং প্রয়োজনে নগরোন্নয়ন দফতরও জমি ফিরিয়ে নিতে পারে।

পরবর্তী কালে বামফ্রন্ট সরকারও সেই নিয়ম কঠোর ভাবে মেনে এসেছে। কিন্তু, এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে বেআইনি ভাবে বাড়ির মালিকানা হাতবদল হয়ে গিয়েছে। রেজিস্ট্রি না হওয়ায় সেই সব বাড়ি থেকে সরকারেরও আর্থিক লাভ হয়নি।

সম্প্রতি দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি, তারকেশ্বর-রামপুরহাট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-সহ একাধিক এলাকার জমির চরিত্র লিজ় থেকে ফ্রি হোল্ডে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, সল্টলেক ও কল্যাণীর ক্ষেত্রে ফ্রি হোল্ড করার কিছু আইনি সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নতুন আইন করার জন্য বিধানসভায় বিল আনা হবে।’’ চলতি অধিবেশনেই সেই বিল আসতে পারে বলে বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছেন ফিরহাদ।

যদিও অনেকে মনে করছেন, এই সরলীকৃত ব্যবস্থায় আগামী দিনে সল্টলেকের মতো খোলামেলা শহরে প্রোমোটার-রাজ মাথাচাড়া দেবে। তাঁদের বক্তব্য, বর্তমানে সল্টলেকের বহু বাড়িতে প্রবীণ নাগরিকেরা বসবাস করেন, যাঁদের সন্তানেরা কর্মসূত্রে বাইরে রয়েছেন। এ ভাবে মালিকানাসম্পূর্ণ ভাবে দিয়ে দিলে সেই সব বাড়ি বিক্রি করে প্রোমোটিংয়ে দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হতে পারে। তাতে এক দিকে যেমন সল্টলেকের মতো পরিকল্পিত উপনগরীতে কংক্রিটের জঙ্গল তৈরি হবে, তেমনই তার কুপ্রভাব পড়বে সেখানকার নিকাশি ব্যবস্থার উপরেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement