post office

Kolkata port: কলকাতা বন্দরে হঠাৎ হেলে পড়ল জাহাজ, জলে ডুবে পণ্যবোঝাই বহু কন্টেনার

কাত হয়ে পড়া জাহাজ এবং জলে পড়ে যাওয়া কন্টেনারগুলি উদ্ধার করার জন্য ফ্লোটিং ক্রেন, শোর ক্রেন এবং ডুবুরি আনার ব্যবস্থা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২২ ০৭:০২
Share:

অঘটন: হেলে গিয়েছে কন্টেনার ভর্তি জাহাজটি। বৃহস্পতিবার, কলকাতা বন্দরে নেতাজি সুভাষ ডকের পাঁচ নম্বর বার্থে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

কন্টেনার বোঝাই করে রওনা হওয়ার অপেক্ষায় থাকা একটি জাহাজ আচমকাই কাত হয়ে উল্টে গেল। বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরে। ‘এম ভি মেরিন ট্রাস্ট-১’ নামে মাঝারি মাপের ওই বাংলাদেশি জাহাজটি এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ কন্টেনার তোলার কাজ সম্পূর্ণ করে নেতাজি সুভাষ ডকের পাঁচ নম্বর বার্থে অপেক্ষা করছিল। ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ হঠাৎ সেটি বাঁ দিকে কাত হতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে জলে পড়তে থাকে জাহাজের পাটাতনে রাখা একের পর এক পণ্যবোঝাই লোহার কন্টেনার। মিনিট পনেরোর মধ্যে জাহাজটি ডকের মধ্যেই সম্পূর্ণ হেলে পড়ে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। নাবিক-সহ জাহাজের মোট ১৫ জন কর্মীর সকলেই অক্ষত রয়েছেন। আজ, শুক্রবার জাহাজটির চট্টগ্রাম রওনা হওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

বন্দর সূত্রের খবর, মাঝারি মাপের ওই জাহাজে ২০ ফুট মাপের ১২০টি এবং ৪০ ফুট মাপের ৪৫টি কন্টেনার ছিল। কন্টেনার এবং পণ্যের সম্মিলিত ভার ছিল ৩০৮৯ টন। এর মধ্যে দুর্ঘটনার জেরে ২০ ফুটের ১৮টি কন্টেনার ডকের জলে ডুবে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ৪০ ফুটের ১০টি কন্টেনার আধডোবা অবস্থায় রয়েছে। তুলনায় বড় আকারের ওই সব কন্টেনার যাতে জলের ধাক্কায় অন্য কোথাও সরে না যায়, তা নিশ্চিত করতে সেগুলি দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। পাশাপাশি, টার্মিনাল অপারেটর এবং বিমা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে জাহাজটিকে উদ্ধার করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

দুর্ঘটনার কারণ জানতে ‘মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট’-এর পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সংস্থার আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। প্রায় ৮৩ মিটার লম্বা ওই জাহাজে কন্টেনারের মধ্যে সুতো, ইনসুলেটর এবং কিছু এফএমসিজি পণ্য নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বলে খবর। বাংলাদেশ ফ্ল্যাগের ওই জাহাজ কলকাতা ও চট্টগ্রামের মধ্যে নিয়মিত পণ্য পরিবহণের কাজ করত বলে বন্দর সূত্রের খবর।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের মতে, ওই জাহাজে পণ্য-বোঝাই কন্টেনার তোলার পরিকল্পনায় কিছু ভুলচুক হয়ে থাকতে পারে। তাঁদের ধারণা, জাহাজটির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ওই ঘটনা ঘটেছে। এক প্রত্যক্ষদর্শী বললেন, ‘‘জাহাজে কন্টেনার তোলার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই স্পষ্ট হবে বলে তাঁদের মত। জাহাজটি যখন কাত হয়ে যায়, তখন জলের নাব্যতা ছিল ৩.৮ মিটারের মতো। এ দিন ওই দুর্ঘটনার জেরে একটি বার্থ বাদে বন্দরের খিদিরপুর ও নেতাজি সুভাষ ডকের বাকি ২৯টি বার্থের সব ক’টিতেই স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।

কাত হয়ে পড়া জাহাজ এবং জলে পড়ে যাওয়া কন্টেনারগুলি উদ্ধার করার জন্য ফ্লোটিং ক্রেন, শোর ক্রেন এবং ডুবুরি আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। কন্টেনার ও জাহাজের জলের নীচে ডুবে থাকা অংশ কী অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে উদ্ধারকাজের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে খবর। উদ্ধারপর্ব শুরু হওয়ার পরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক করতে ২০-২৫ দিন লাগতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement