West Bengal Panchayat Election 2023

পুলিশকে জানালেও কী ভাবে ভোটদানে বাধা, জানা নেই সেক্টর অফিসারের

শহর নিউ টাউনের পঞ্চায়েত ভোটের দায়িত্বে থাকা সিভিল সেক্টর অফিসার সুদীপ্ত চক্রবর্তীর জবাব, ‘‘ভোট নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারেরা আমার কাছে কোনও অভিযোগ করেননি।”

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ০৭:০৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মাস্টারমশাই কি কিছুই দেখেননি?

Advertisement

নিউ টাউন শহরে ভোটকেন্দ্রের ভিতরেই ছিল সেক্টর অফিসারের অফিস। নির্বাচনের দিন যাঁর কাজ ছিল, পুলিশকে পরিচালনাকরা। তা সত্ত্বেও নিউ টাউনে ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের বাধা দেওয়া, বিরোধী দলের প্রার্থীদের বাড়িতেই বন্দি করে রাখার একাধিক অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েতনির্বাচনের দিনে।

অথচ, সেই সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট জমাই পড়েনি রাজারহাটের বিডিও তথা ওই ব্লকের রিটার্নিং অফিসারের কাছে। নিউ টাউন শহরে যেখানে মানুষ ভোট দিতেই পারেননি বলে অভিযোগ, সেখানে ৯৫ শতাংশ ভোট শাসকদলের পক্ষে কারা দিলেন, মঙ্গলবার তার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। তার পরেই সরকারি স্তরে দায় ঠেলাঠেলির শুরু।

Advertisement

রাজারহাটের বিডিও ঋষিকা দাস মঙ্গলবারই দাবি করেছেন, তাঁর কাছে সেক্টর কিংবা প্রিসাইডিং অফিসারেরা ভোট নিয়ে কোনও নেতিবাচক রিপোর্ট দেননি। তবে কি বিরোধী তো বটেই, সাধারণ ভোটারদের ভোট না দিতে পারা, রাস্তায় শাসকদলের বাহিনীর ভোটদানে বাধা দেওয়ার সব অভিযোগ মিথ্যে?

শহর নিউ টাউনের পঞ্চায়েত ভোটের দায়িত্বে থাকা সিভিল সেক্টর অফিসার সুদীপ্ত চক্রবর্তীর জবাব, ‘‘ভোট নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারেরা আমার কাছে কোনও অভিযোগ করেননি। তবে এটা ঠিক যে, আমি বহু অভিযোগ পেয়েছি, যেগুলি পুলিশকে জানিয়েছি।’’ তাঁর এমন বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সিপিএম নেতা সপ্তর্ষি দেবের প্রশ্ন, ‘‘উনি তো সেক্টর অফিসার। পুলিশের তো ওঁর কথা শোনা উচিত। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রের বাইরে আটকানো হল, দিনভর ভোটকেন্দ্রের চার দিক বহিরাগতেরা ঘিরে রাখল। উনি পুলিশ ডাকলেন, কিন্তু মানুষ ভোট দিতে পারলেন না, এটা খুব আশ্চর্য নয় কি?’’

নিউ টাউনের এ পি জে আব্দুল কালাম কলেজে ১২টি বুথ ছিল। ওই ভোটকেন্দ্রের ভিতরেই ছিল সেক্টর অফিসারের অফিস। ফলে, ভোটারদের তরফে ভোটদানে বাধা পাওয়ার অভিযোগ আসাসত্ত্বেও কেন সেক্টর অফিসার সতর্ক ভাবে ভোট পরিচালনা করলেন না, সেই প্রশ্নও তুলছেন বিরোধীরা?

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অনুপম ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের মাত্র এক জন প্রার্থী খুব কষ্ট করে ভোট দিতে পেরেছিলেন। সেক্টর অফিসার ভোটদানে বাধার অভিযোগ যখন পেয়েছেন, তখন তিনি ভোটারদের প্রকৃত পরিচয় খতিয়ে দেখার ব্যাপারে কেন সতর্ক হলেন না? ৯৫ শতাংশ ভোট কারা দিয়ে গেলেন?’’

গত ৮ জুলাই, ভোটের দিন নিউ টাউন শহরের রাস্তা দখল করে নিয়েছিল বহিরাগতেরা। পুলিশের গার্ডরেল রাস্তায় নামিয়েভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তাও আটকানো হয়। ভোটদানের ইচ্ছে জাহির করে প্রবল হুমকি ও শাসানির মুখে পড়তে হয় বহু প্রবীণ নাগরিককে। শাসক দলের নেতাদের দেখা যায়, ভোটদানে বাধা দেওয়ায় তদারকি করতে। সেক্টর অফিসারের দাবি মতো,যদি পুলিশকে তিনি অভিযোগের বিষয়ে জানিয়েই থাকেন, সে ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নউঠছে। অভিযোগ পেয়েও কেন পুলিশ সক্রিয় হল না? কেন দিনভর ভোটদানের অভিযোগ জিইয়ে থাকল নিউ টাউনে?

এই সব প্রশ্ন করা হলে বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘এটা এখন বিচারাধীন বিষয়। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement